• মোটা জরিমানা আদায় করেই রেল রোকো বন্ধে বিরাট সাফল্য
    এই সময় | ১৪ মে ২০২৫
  • কথায় কথায় ট্রেন অবরোধ আটকাতে আরও কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছেন রেলকর্তারা। শুধু মামলা নয়, এ বার জরিমানা বা ক্ষতিপূরণও দাবি করবে রেল। স্টেশনে বা রেললাইনে ঝান্ডা পুঁতে রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের জেরে যাত্রী হয়রানির সঙ্গে কয়েক লক্ষ টাকা গুনাগার দিতে হয় রেলকে।

    গত বছর কোচবিহারের জোড়াই রেল স্টেশনে অবরোধ–আন্দোলনে কয়েক কোটি টাকা, সম্প্রতি কাটিহার ডিভিশনে রেল রোকোর জেরে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল রেলকে। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন এই পথে হাটতে চাইছেন রেলকর্তারা। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগে রেল অবরোধ হলে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হতো। এ বার আরও কড়া হাতে রেল অবরোধ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

    রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া কোনও জায়গায় দু'মিনিট ট্রেন থামলে প্রায় দশ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়। বিশেষ কিছু ট্রেনের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ভারতীয় রেল মডেল করেছে দু'টি ঘটনা। গত বছর ১১ ডিসেম্বর জোড়াই রেলস্টেশনে ট্রেন অবরোধ করেছিল গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন (জিসিপিএ)।

    রাজবংশী ভাষাকে অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা–সহ আরও নানা দাবিতে জোড়াই রেলস্টেশনে ওই দিন সকাল পৌনে সাতটা থেকে বেলা পৌনে বারোটা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টা রেল অবরোধে বন্দে ভারত–সহ একাধিক প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করতে হয়। বেশ কিছু ট্রেনকে ঘুরপথে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠানো হয়। এমনকী যাত্রীদের পৌঁছে দিতে নিউ কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার স্টেশনের বাইরে বাস–এর ব্যবস্থা রাখতে হয়েছিল রেলকর্তাদের। কিছু টিকিটও বাতিল করতে হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বংশীবদন বর্মন–সহ ১৮ জন গ্রেটার নেতার নামে আলিপুরদুয়ার আদালতে মামলা করেছিল রেল। একই সঙ্গে তাঁদের কাছ থেকে ৫ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয়।

    সম্প্রতি কাটিহার ডিভিশনে একটি রেল রোকো আন্দোলনেও রেলের আর্থিক ক্ষতি হয়। সেখানেও ৩৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। আগামীতে রেল অবরোধের চিন্তা যাতে কেউ না-করতে পারে, তাই এই দু'টি ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের বিষয়টিকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেলকর্তারা।

    উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, 'রেল রোকো আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এখন থেকে রেলওয়ে ট্র্যাকে যে কোনও বিক্ষোভে আইন প্রয়োগের সঙ্গে আর্থিক জরিমানা করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি ভারতীয় রেলের একটি বিরল পদক্ষেপ।' তিনি জানিয়েছেন, রেলের আইনে ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও মামলা করা হবে। গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মনের মন্তব্য, 'রেল অবরোধের পরে ওরা মামলা করেছিল। তার জন্য আদালত থেকে জামিন নিয়েছি। সেই মামলা লড়ছি।' নতুন এই ফরমানে সুফল মিলেছে বলে দাবি করেছেন রেলকর্তারা।

  • Link to this news (এই সময়)