• ‘বসন্ত বিলাপ’-এর মেদিনীপুর স্টেশন এ বার ‘মডেল’, বরাদ্দ ৫২৮ কোটি
    এই সময় | ১৪ মে ২০২৫
  • ‘আমি জানতাম, তুমি আসবে। তাই অপেক্ষা করছিলাম।’ কাল্ট সাদাকালো ছবি ‘বসন্ত বিলাপ’-এর ক্লাইম্যাক্সে ইঞ্জিনের ধোঁয়া উড়িয়ে প্যাসেঞ্জার ট্রেন মেদিনীপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই ফুট ওভারব্রিজে পা-রাখা নায়িকা অনুরাধা (অপর্ণা সেন)-র উদ্দেশে এই সংলাপ বলতে শোনা যায় নায়ক শ্যাম (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়)-কে। এ বার শ্যাম-অনুরাধার স্মৃতি বিজড়িত সেই মেদিনীপুর স্টেশনের আমূল বদল ঘটতে চলেছে। এর জন্য ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে ৫২৮ কোটি টাকা।

    কেমন হতে চলেছে নতুন মেদিনীপুর স্টেশন?

    মেদিনীপুর স্টেশনের পুরোনো ফুট ওভারব্রিজের পাশাপাশি যোগ হয়েছে আরও একটি ফুট ওভারব্রিজ। বেড়েছে প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা। এ বার ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পের সৌজন্য়ে আমূল পরিবর্তন হতে চলেছে মেদিনীপুর স্টেশনের। রেলের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, এ বার প্ল্যাটফর্ম থেকে স্টেশন চত্বর হয়ে উঠবে একেবারে আধুনিক ও ঝকঝকে। এমনকী, নতুন স্টেশন হওয়ার পর তা অত্যাধুনিক যে কোনও বিমানবন্দরকে হার মানাবে বলে দাবি রেল কর্তৃপক্ষের।

    কী বলছেন খড়্গপুর ডিভিশনের রেলকর্তারা?

    মঙ্গলবার, ১৩ মে, খড়্গপুর ডিভিশনের মেদিনীপুর স্টেশন কর্তৃপক্ষের তরফে নতুন নকশা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। খড়্গপুর ডিভিশনের এক রেলকর্তা বলেন, ‘এই প্রকল্পের অধীনে স্টেশনগুলোর উন্নতির পাশাপাশি যাত্রী সুবিধার দিকটাও নজরে রাখা হচ্ছে। যাত্রীদের ওয়েটিং রুমের জন্য উন্নত লাউঞ্জের ব্যবস্থা থাকবে। সেই সঙ্গে থাকবে চলমান সিঁড়ির ব্যবস্থাও। স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা এলাকা তৈরি হবে ডাস্টপ্রুফ এরিয়া হিসেবে। যাত্রীরা সেখানে বিনামূল্যে ওয়াইফাই-ও পাবেন। এ সবের পাশাপাশি রেল স্টেশনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য আরও জোর দেওয়া হবে।’

    মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দেওয়া হয়েছে দখলদার উচ্ছেদের নোটিস

    স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দখল হয়ে যাওয়া রেলের জায়গা উদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তাই উন্নয়নমূলক কাজের জন্য মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দেওয়া হচ্ছে উচ্ছেদ নোটিস। আর সেই নোটিসকে ঘিরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্টেশন সংলগ্ন ভূঁইয়াপাড়া এলাকায়। ওই এলাকায় থাকেন প্রায় ৫০০-৭০০ পরিবার। তাঁরা রেলের জায়গা দখল করে সেখানে থাকছেন বলে দাবি খড়্গপুর ডিভিশনের রেলকর্তাদের। তবে আপাতত ৬টি পরিবারকে নোটিস দিয়েছেন মেদিনীপুর স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

    এ বিষয়ে মেদিনীপুরের পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ‘ওই এলাকায় প্রায় হাজারখানেক পরিবার ৩৫-৪০ বছর ধরে বসবাস করছেন। উপযুক্ত পুনর্বাসন ছাড়া তাঁদের এ ভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না।’ যদিও নাম প্রকাশ্য়ে অনিচ্ছুক মেদিনীপুর স্টেশনের এক রেল আধিকারিকদের দাবি, ‘বাইরে থেকে আসা ৩০-৪০টি পরিবার বাড়তে বাড়তে আজ ৩০০-৪০০ হয়েছে। জায়গা তো খালি করতেই হবে। আমরা ৬টি পরিবারকে দিয়ে শুক্রবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করব।’

  • Link to this news (এই সময়)