ICSE-র পর এ বার CBSE-তেও সর্বভারতীয় মেধাতালিকায় নিজের জায়গা পাকা করলেন অর্চিষ্মান নন্দী। কিছুদিন আগে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা (JEE)-র মেধা তালিকাতেও প্রথম স্থান অধিকার করেছেন এই কৃতী ছাত্র। খড়্গপুর গ্রামীণের চাঙ্গুয়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের বারবেটিয়া এলাকার বাসিন্দা অর্চিষ্মান নিজের সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন তাঁর দাদুকে। রসায়নের কঠিন মারপ্যাঁচ কী ভাবে মজার ছলে মনে রাখা যায় সেই টেকনিক দাদুর থেকেই শিখেছেন তিনি। দাদু বঙ্কিমবিহারী মাইতিকে নিয়ে কী বললেন অর্চিষ্মান? তাঁর রেজ়াল্ট দেখার পর কী বলছেন তাঁর বাবা-মা?
অর্চিষ্মানের সাফল্য
মঙ্গলবার CBSE-র দ্বাদশ শ্রেণীর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে অর্চিষ্মান পেয়েছেন ৪৯০ নম্বর (৯৮ শতাংশ)। CBSE বোর্ড অনুমোদিত IIT খড়্গপুরের DAV মডেল স্কুলের ছাত্র অর্চিষ্মান। শুধু স্কুলের সর্বোচ্চ নম্বর নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও অর্চিষ্মান সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্কুল কর্তৃপক্ষ ও বাবা-মা। অর্চিষ্মান ইংরেজিতে ৯৭, অঙ্কে ৯৮, ফিজ়িক্সে ৯৭ এবং কম্পিউটার সায়েন্সে ৯৮ পেয়েছেন। তবে রসায়নে ১০০ পেয়ে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
অর্চিষ্মানের পরিবার
অর্চিষ্মানের বাবা মিঠুন নন্দী একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্মী। মা অনিন্দিতা মাইতি নন্দী বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। অর্চিষ্মানের মামাতো দাদু বঙ্কিমবিহারী মাইতি খাকুড়দা সংলগ্ন বড়মোহনপুর হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত রসায়নের শিক্ষক।
অর্চিষ্মানের সাফল্যের সিক্রেট
অর্চিষ্মান জানিয়েছে, রসায়নের কঠিন মারপ্যাঁচ মজার ছলে তাঁর দাদুর থেকেই শেখা। অর্চিষ্মানের দাদু IIT খড়্গপুরের ১৯৭০ ব্যাচের প্রাক্তনী। রসায়নে দাদুই তাঁর শিক্ষাগুরু। অর্চিষ্মান বলেন, ‘কেমিস্ট্রির জটিল সব সিরিজ় কী ভাবে সহজে মনে রাখতে হয়, তা দাদুই শিখিয়েছেন। এই যেমন, ইলেক্ট্রো পজ়িটিভ সিরিজ়ের জন্য দাদু একটি ছড়া শিখিয়েছে।’ সেটা হলো-
পটাশ (পটাশিয়াম) বেরিয়ে (বেরিলিয়াম) কাসো (ক্যালসিয়াম-সোডিয়াম)
মাগো (ম্যাগনেসিয়াম) আলু (অ্যালুমিনিয়াম)
মন (ম্যাঙ্গানিজ) জানে (জিঙ্ক) তো কর্ম (ক্রোমিয়াম) ফেরে (আয়রন) লেটে (লেড)
হাই (হাইড্রোজেন) তুলে আয়
কু (কপার) মাসি (মার্কারি-সিলভার) গো (গোল্ড) পিটি (প্ল্যাটিনাম)
দাদু এখন অসুস্থ। তাই দাদুর ‘রসকাব্যে রসায়ন’ বইটি লেখা অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এটাই এখন আক্ষেপ অর্চিষ্মানের। তবে আক্ষেপটাকে দূরে সরিয়ে রেখে এখন অর্চিষ্মানের পরবর্তী লক্ষ্য, আগামী ১৮ মে জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্স পরীক্ষায় সফল হয়ে IIT খড়্গপুরে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ভর্তি হওয়া।