পহেলগামের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের মাধ্যমে প্রত্যাঘাতে সাফল্য পেয়েছে ভারত। এই সাফল্যকে সামনে রেখে দেশজুড়ে বিজেপি শুরু করেছে ‘ত্রিরঙ্গা যাত্রা’। ১৩ মে, মঙ্গলবার থেকে ২৩ মে, শুক্রবার পর্যন্ত বিজেপির এই কর্মসূচি চলছে। এবার তৃণমূল কংগ্রেসও এই বিষয়েই কর্মসূচির পথে হাঁটছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১৭ ও ১৮ মে বিকেল ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে শুরু হবে জাতীয়তাবাদী মিছিল।
গত মঙ্গলবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী শনি ও রবিবার বিকেল ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি ব্লক ও শহরের ওয়ার্ডে সমাবেশ করবে তৃণমূল কংগ্রেস দল। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এটা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটা সামাজিক দায়িত্ব। যাঁরা মাতৃভূমির জন্য প্রাণ দিয়েছেন, সেই সব শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে দলের প্রতিটি জেলা, শহর, ব্লক ও ওয়ার্ড কমিটিকে এই কর্মসূচি সফল করতে লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা, দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং দেশের ধর্ম নিরপেক্ষ আদর্শকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এই শোভাযাত্রায়। সেই সঙ্গে দেশাত্মবোধক গান, জাতীয় পতাকা, ব্যানার, স্লোগান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশপ্রেমের বার্তাকে তুলে ধরাই হবে এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য। স্থানীয় কোনও শহিদ জওয়ানের পরিবার থাকলে, তাঁদের ওই কর্মসূচিতে শামিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির ‘ত্রিরঙ্গা যাত্রা’র পাল্টা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল। এরকম মনে করছে, রাজনৈতিক মহল। তাঁদের অনেকের ধারনা দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের মতো ইস্যুকে শুধুমাত্র বিজেপির হাতে ছেড়ে না দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সচেতনভাবেই নিজের দলের সর্ব স্তরে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশপ্রেমের সর্বজনীন বার্তা তুলে ধরতে চেয়েছেন। এই সঙ্গে মনে করা হচ্ছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে জাতীয়তাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি যেন এককভাবে লাভবান হতে না পারে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই কর্মসূচির ক্ষেত্রে কোনও ঢিলেঢালা মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না। শান্তিপূর্ণ এবং শৃংখলাবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে। এই উদ্যোগের প্রতি যথেষ্ট লক্ষ্য রাখছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগে একদিকে যেমন শহিদদের প্রতি সম্মান জানানো হবে, সেই সঙ্গে দেশপ্রেম ও ধর্ম নিরপেক্ষতার বার্তাও দেওয়া হবে, তেমনই বিজেপিকে এই পরিপ্রেক্ষিতে সামান্য জমিও না ছাড়ার রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে ধারনা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।