• রেজল্যুশন দেখাতে অস্বীকার, পঞ্চায়েত সচিবকে হুমকি দিয়ে তাণ্ডব পদ্ম নেতার
    বর্তমান | ১৫ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: তিনি পঞ্চায়েতের সদস্য নন। প্রশাসনেরও কোনও কর্তাব্যক্তি নন। তাহলেও তাঁর দাবি, পঞ্চায়েতের রেজল্যুশনের খাতা ও সরকারি নথি দেখাতে হবে! স্বাভাবিকভাবেই সচিব তাঁর দাবি মানতে চাননি। আর তাতেই ভরা পঞ্চায়েতে রীতিমতো তাণ্ডব চালালেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। এমনকী রেজল্যুশনের খাতাও তিনি ছিঁড়ে দেন বলে অভিযোগ।  পঞ্চায়েত সচিব ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শান্তিপুর থানার। এদিকে, বিজেপি নেতার এহেন তাণ্ডবকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক আক্রমণ শানিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। 

    শান্তিপুর ব্লকের বিজেপি পরিচালিত বাগআঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। অন্যান্য দিনের মতোই মঙ্গলবার অর্থাৎ, ১৩ মে দুপুরে পঞ্চায়েত অফিসের রেজল্যুশনের খাতা লিখছিলেন পঞ্চায়েতের সচিব মিহির সরকার। তাঁর অভিযোগ, আচমকা বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তথা দোর্দন্ড প্রতাপ নেতা উত্তম বিশ্বাস দপ্তরে ঢুকে অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেন। সরাসরি তিনি দাবি করেন, পঞ্চায়েতের রেজল্যুশনের খাতা এবং নথি দেখাতে হবে। কিন্তু পঞ্চায়েতের সদস্য অথবা প্রশাসনের অংশ নন, এমন ব্যক্তিকে সেটি দেখাতে অস্বীকার করেন সচিব মিহির সরকার। তখনই তাণ্ডব শুরু করে দেন ওই বিজেপি নেতা। গোটা বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত সচিব শান্তিপুরের বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানান। পরে  শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মিহিরবাবু। অভিযোগ পত্রে তিনি আরও বলেছেন, ওই বিজেপি নেতার এহেন আচরণ এই প্রথম নয়। গত চার মাসে এই নিয়ে তিনবার পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে তাণ্ডব চালালেন তিনি। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তম বিশ্বাস বলেন, আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। পঞ্চায়েতের সচিব কিছু লোকের চাপে পড়ে এই অভিযোগ করেছেন। আমি বিষয়টি সর্বসমক্ষে তুলে ধরব। যদিও দলের মন্ডল সভাপতির এই আচরণ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন প্রধান রোহিত জান। তিনি বলেন, যখন ঘটনা ঘটেছে তখন আমি উপস্থিত ছিলাম না। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে শান্তিপুর থানা তদন্ত শুরু করেছে। বুধবার সচিবের তরফে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় বিজেপির ওই মণ্ডল সভাপতিকে। 

    রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এটাই তো বিজেপির সংস্কৃতি। ওরা দল আর প্রশাসনের তফাৎ বোঝে না। পঞ্চায়েতটি নিজেদের দখলে রয়েছে বলে সদস্য না হওয়া সত্বেও সেখানে এই কাণ্ড করছে। মানুষ এটা থেকেই বুঝতে পারছে। এরা যদি রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তবে পার্টি অফিস থেকে প্রশাসন চালাবে। পুলিস বিষয়টির তদন্ত করে দেখুক। আইনি যা ব্যবস্থা নেওয়ার তারাই নেবে।  অভিযুক্ত বিজেপি নেতা।
  • Link to this news (বর্তমান)