প্রতিবেশীর ছোড়া ইটের আঘাতে মৃত্যু তাঁতশিল্পীর, গ্রেপ্তার দুই ভাই
বর্তমান | ১৫ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: পথ কুকুরকে মারার প্রতিবাদ করায় প্রতিবেশী দুই ভাইয়ের ইটের আঘাতে প্রাণ গেল বিষ্ণুপুরের এক তাঁতশিল্পীর। মৃতের নাম সুধীন পাল(৫০)। বিষ্ণুপুর শহরের কৃষ্ণগঞ্জের বাসিন্দা সুধীনবাবু রাজ্য সরকারের একাধিক পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। পথ কুকুরদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল। সেটাই তাঁর কাল হল। সুধীনবাবুর আশ্রয়ে পথ কুকুরগুলি রাস্তা ও বাড়ির সামনে নোংরা করছে, এমনই অভিযোগে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল। মঙ্গলবার রাতে কুকুরগুলিকে মারার প্রতিবাদ করাতেই প্রতিবেশী দুই ভাইয়ের ইটের ঘায়ে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম শৈলেন পাল ও তোতন পাল। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পুলিস জানিয়েছে, রাতেই অভিযুক্ত দুই ভাইকে আটক করা হয়। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
মৃতের ভাই অমিতাভ পাল বলেন, আমরা পথ কুকুরগুলিকে বরাবরই ভালোবাসি। আমার দাদা কোনও আত্মীয়ের বাড়ি গেলেও কুকুরগুলিকে খাবার দেওয়া হয়েছে কি না, তা খোঁজ নিতেন। পশুদের ভালোবাসতে গিয়ে আমার দাদাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হল। আমরা অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তি চাই।
স্থানীয় ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার হীরালাল দত্ত বলেন, শহর গ্রামে কুকুর তো থাকবেই। তাদের কেউ খাবার দিলে সেখানেই তারা বেশি থাকে। কিন্তু, তাই বলে এভাবে একজন পশুপ্রেমীকে খুন করা হবে! এটা চরম অন্যায়। দোষীরা যাতে আইন অনুযায়ী চরম শাস্তি পায় পুলিসের কাছে সেই আর্জি জানানো হয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুধীনবাবু সহ পরিবারের প্রায় সকলেই শহরের গোপালগঞ্জে বুড়ো শিবের গাজন দেখতে গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সুধীনবাবুর ভাই অমিতাভবাবু এবং পরিবারের অন্যান্যরা বাড়ি ফেরেন। ওই সময় প্রতিবেশী শৈলেন ও তোতন কুকুরগুলিকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ছে দেখে অমিতাভবাবু তার প্রতিবাদ করেন। তাঁকে হেনস্তা করা হয়। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে অশান্তি শুরু হওয়ায় পাড়ার লোকজনও জড়ো হন। খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার হীরালাল দত্তও আসেন। তখনকার মতো বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়। তবে এধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য অমিতাভবাবু থানায় অভিযোগ জানাতে যান।
ঠিক তখন গাজনতলা থেকে বাড়ি ফেরেন সুধীনবাবু। ভাইকে হেনস্তা করা হয়েছে শুনে তিনি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে রাস্তায় তার প্রতিবাদ করেন। তখনই শৈলেন ও তার ভাই দু’জনে মিলে সুধীনবাবুর বুকে ইট দিয়ে সজোরে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন সুধীনবাবু। খবর পেয়ে অমিতাভবাবু থানা থেকে ফিরে দাদাকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাতেই অমিতাভবাবু শৈলেন ও তোতনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে। সুধীন পাল