• মহিষাদলে পুলকারের ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু, রক্ষা পড়ুয়াদের
    বর্তমান | ১৫ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: মঙ্গলবার মহিষাদলে পুলকারের ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শেখ ফয়জল(৫৫)। দুর্ঘটনায় আরও এক মহিলা জখম হয়েছেন। তিনি মহিষাদলের বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদিন সকাল ৭টা নাগাদ মহিষাদলের একটি বেসরকারি স্কুলের পুলকার গেঁওখালির দিক থেকে পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল। সেইসময় মহিষাদল-গেঁওখালি রোডের রঙ্গিবসান রেলব্রিজ সংলগ্ন শীতলা মন্দিরের কাছে দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে সজোরে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় দুই পথচারী জখম হন। ফয়জল সাহেবের মাথার পিছনে চোট লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গাড়ির চালক উত্তেজিত জনতার মারে গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক পাঠানো হয়েছে। তবে গাড়িতে থাকা ১৮জন শিশু সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা দখল করে বালি ও স্টোনচিপ রাখায় ও চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ রহমান বলেন, খুঁটিতে ধাক্কা লাগায় গাড়িটি পাশের নয়ানজুলিতে উল্টে যায়নি। গাড়িটি উল্টে গেলে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। তাঁর অভিযোগ, পুলকার চালক নেশাগ্রস্ত থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে অভিভাবকদের অভিযোগ, চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন। পাশাপাশি তাঁরা গেঁওখালি রোডজুড়ে রাস্তার দু’পাশে ইমারতি ব্যবসা চালানোর অভিযোগ করেছেন। বেহাল রাস্তা নিয়েও এদিন অভিযোগ তোলেন অনেকে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বেশ কয়েকটি পুলকারের চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালান। এনিয়ে স্কুলে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। 

    অভিভাবকরা বলেন, পুলকার নিয়ে স্কুলের গাফিলতি রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো নজর দেয় না। অনেক পুলকার রাতে ভাড়া খেটে সকালে বাচ্চাদের নিয়ে যায়। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ মানতে নারাজ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরণী পন্ডা বলেন, গাড়ির চালক নেশাগ্রস্ত ছিল কিনা জানি না। এধরনের অভিযোগ এলেই চালককে বাদ দেওয়া হয়। স্কুলের বাচ্চারা কেউ জখম হয়নি। তবে অনেকেই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। অভিভাবকরা এদিন অনেকেই বাচ্চাদের বাড়ি ফেরত নিয়ে যান। 

    মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী পুলিসকে পুলকারের মালিক ও চালকদের নিয়ে জরুরি মিটিং করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন স্কুলের পুলকারগুলির গাড়ির কাগজপত্র পুলিসকে জমা করতে বলা হয়েছে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পুলকার চালানোর অভিযোগ গুরুতর। এনিয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তার পাশে বেআইনি ইমারতি সামগ্রীর ব্যবসা নিয়ে পুলিস ও ব্লক প্রশাসনকে যৌথ অভিযান চালানোর আবেদন করেছি।
  • Link to this news (বর্তমান)