• তীব্র গরমে বারবার লোডশেডিং ময়ূরেশ্বরে দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ
    বর্তমান | ১৫ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: তীব্র রোদ ও গরমে টেকা দায়। এরই মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ ময়ূরেশ্বরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। প্রতিবাদে বুধবার সকালে ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়ার কাছে পথ অবরোধ করেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। ঘণ্টা দু’য়েক ধরে অবরোধ চলে। পরে পুলিসের আশ্বাসে অবরোধ উঠলেও বিদ্যুৎদপ্তরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। 

    প্রচণ্ড গরমে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত ময়ূরেশ্বরের বাসিন্দারা। দিনে ও রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। কোথাও আবার একটানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। কোথাও আবার দিনভর লোডশেডিং। সারাদিন কাজের পর মানুষ রাতে যে নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন তার উপায় নেই। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিশু ও রোগীদের। ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার। পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। পাম্প চালাতে না পেরে পানীয় জলের সমস্যা প্রকট হচ্ছে। লোকপাড়া, কুলিয়ারা, বজেরহাট, রুসুনপুর, নবগ্রাম সহ একাধিক গ্রামে নিত্যদিন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে দমবন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা হচ্ছে বাসিন্দাদের। এরই প্রতিবাদে বুধবার সকালে নপাড়া থেকে কলেশ্বর যাওয়ার রাস্তায় লোকপাড়ার কাছে অবরোধ করেন এলাকার বাসিন্দারা। বজেরহাটের বাসিন্দা মহম্মদ রফিক খান বলেন, প্রচণ্ড রোদগরমে ঘরের বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। এর মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘনঘন লোডশেডিং। দিন কয়েক ধরে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। তিনি বলেন, গত সোমবার ঝড় শুরু হতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে বিদ্যুৎ এলেও তা স্থায়ী হয়নি। এরই মধ্যে মঙ্গলবার ঝড় শুরুর অনেক আগে থেকেই বুধবার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ নেই। সারারাত ঘুম নেই। এরই প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। আন্দোলনকারীরা বলেন, গরমে টেকা যাচ্ছে না। তার উপরে মশার অত্যাচার। ফ্যান চললে কিছুটা স্বস্তি মেলে। কিন্তু এলাকায় অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গ্রামে গ্রামে এখন টিউবওয়েল সেভাবে নেই। অনেকেই সরকারি পানীয় জল প্রকল্প বা বাড়ির পাম্পের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তেমনই রাতের পর রাত ঘুম নেই। কত আর হাতপাখা ঘোরাব। প্রায়ই রাস্তায় পায়চারী করে রাত কাটাতে হচ্ছে। প্রায় দু’ঘণ্টা করে অবরোধ চলার পর ময়ূরেশ্বর থানার পুলিস এসে দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

    বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের রামপুরহাট মহকুমার ডিভিশনাল ম্যানেজার নীলাদ্রি শেখর সাহা বলেন, ঘনঘন লোডশেডিংয়ের অভিযোগ সঠিক নয়। মঙ্গলবার মল্লারপুর ও ময়ূরেশ্বরের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। তাতেই ময়ূরেশ্বরে দু’টি ৩৩ হাজার ভোল্টের লাইনের খুঁটি ও ১১ হাজার লাইনের তিনটি পোল ভেঙেছে। যার জেরে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাতভর কাজ করে এদিন ভোরের দিকে অস্থায়ীভাবে ৩৩ হাজার লাইন স্বাভাবিক করা গিয়েছে। এরপর এক এক করে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন চার্জ করা হচ্ছে। আটটির মধ্যে সাতটিতে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, এদিন বিকেলে পর্যন্ত বেশকিছু গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি।
  • Link to this news (বর্তমান)