বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে ক্ষুব্ধ মানুষ, বৈঠক ডাকল হুগলি জেলা পরিষদ
বর্তমান | ১৫ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে অন্তহীন অভিযোগের মুখে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকল হুগলি জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুৎবণ্টন কোম্পানি। গত প্রায় তিন মাস ধরে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেই পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ জমা পড়ছিল। কোথাও লাগাতার লোডশেডিং, তো কোথাও মাঝে মাঝেই বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়া নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছিল। এমনকী, বিদ্যুৎবণ্টন কোম্পানির নানা স্টেশনের ম্যানেজার থেকে কর্মীদের হেনস্তার মুখে পড়তে হয়েছে গ্রাহকদের। এই পরিস্থিতিতে ২২ মে জরুরি বৈঠক তলব করেছেন জেলা পরিষদ কর্তারা।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মারফৎ ওই বৈঠক তলব করা হয়েছে। বিদ্যুৎবণ্টন কোম্পানির জেলার সমস্ত স্তরের পদাধিকারীদের থাকতে বলা হয়েছে। আপৎকালীন ওই বৈঠকের আয়োজন ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎবণ্টন কোম্পানির হুগলি জেলার রিজিওনাল ম্যানেজার মধুসূদন রায় বলেন, ২২ মে জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সম্প্রতি খানাকুলে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল। খানাকুলে, গোঘাট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। সামান্য সমস্যা হরিপালে হয়েছিল। তাছাড়া গোটা জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে কোনও সমস্যার অভিযোগ পেলেই পদক্ষেপ করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও সাধারণ মানুষ অভিযোগ করতে পারেন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কারণেই কিছু পদক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে সমস্যা হয়েছে, এমন কোনও তথ্য নেই। এনিয়ে হুগলি জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ নিখিল পাত্র বলেন, কৃষক থেকে নাগরিক সবাই বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি মাত্রা ছাড়িয়েছে। তাই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ হুগলি জেলা পরিষদের মেন্টর সুবীর মুখোপাধ্যায় ও সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া। বস্তুত তাঁদের নির্দেশেই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সুবীরবাবু বলেন, নাগরিকদের সমস্যার কথা জনপ্রতিনিধিরাই সবচেয়ে ভালো জানেন। রিজিওনাল ম্যানেজার আইন অনুসারে স্থায়ী সমিতির আহ্বায়ক নন, সচিব পদে রয়েছেন। জেলা পরিষদ তাঁকে নির্দেশ দিলে তবেই তিনি মিটিং ডাকতে পারেন। মিটিং ডাকার পদ্ধতিগত বিষয়ের চর্চা থেকে অনেক বেশি জরুরি গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। সেটি হচ্ছে না বলেই সমস্ত পদস্থ কর্তাদের ডাকা হয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সিঙ্গুরে দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পথ অবরোধ হয়েছিল। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিতে বিদ্যুৎ না থাকার অভিযোগ করলে সময়ে তার সুরাহা হয় না। হুগলির একাধিক এলাকায় রাতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য কর্মী থাকেন না। এমন নানা অভিযোগে জেরবার হয়েই জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠক তলব করেছে।