ছেলের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন মা। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সরশুনা থানা এলাকায়। মৃতের নাম অভিজিৎ বাগদি (১৮)। তিনি যাদব ঘোষ রোডের একটি বাড়িতে থাকতেন। এদিন সকাল থেকে বাড়ির ভিতর থেকে দুর্গন্ধ পান প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সরশুনা থানার পুলিস। বিছানায় পড়ে থাকতে দেখা যায় অভিজিতের পচাগলা দেহ। পাশেই বসে রয়েছেন তাঁর মা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, অন্তত দু’দিন আগে মৃত্যু হয়েছে কিশোরের। মৃতদেহটি উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছেন তদন্তকারীরা। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার মৃতের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। পাশাপাশি, মৃত কিশোরের মা’কে মানসিক চিকিৎসার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জন্ম থেকে মূক ও বধির অভিজিৎ। তিনি আরও নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাই সারাদিনই শয্যাশায়ী থাকতেন তরুণ। তাঁর বাবা বৈদ্যনাথ বাগদি আর্থিক অনটনে ভুগছিলেন। তার জেরেই মাঝেমধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অশান্তি হতো। পুলিস জানিয়েছে, তিন দিন আগে সেই বিবাদ চরমে ওঠে। তখনই বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তারপর থেকে মায়ের সঙ্গেই থাকতেন অভিজিৎ। তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, কিশোরের মা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। তাই ছেলের মৃত্যুর পরেও তিনি কাওকে কিছু জানাতে পারেননি। লালবাজার জানিয়েছে, সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত চলছে। কিশোরের কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। অসুস্থজনিত কোনও কারণ, নাকি নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য? তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না সরশুনা থানার পুলিস। দেহটি পচে যাওয়া বাইরে থেকে দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।
প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের নজরে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া বাবা। এই মৃত্যুর নেপথ্যে তাঁর কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। শয্যাশায়ী মূক ও বধির ছেলে এবং মানসিক রোগী স্ত্রীকে ছেড়ে চলে গেলেন কেন? স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে ইতিমধ্যেই বৈদ্যনাথ বাগদির মোবাইল নম্বর জোগাড় করেছে পুলিস। সেটির লোকেশন ট্র্যাক করছে পুলিস। তাঁর খোঁজ মিললে তদন্তের স্বার্থে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা।