ভারত–পাক উত্তেজনার আবহে সুন্দরবনে আরও বাড়ল নজরদারি
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ মে ২০২৫
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশের সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ এসেছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশের ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর থেকে ভারত–বাংলাদেশ সীমানায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। সম্প্রতি সুন্দরবন এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। জল ও স্থল সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
রাজ্যের বসিরহাট সীমান্তের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে রয়েছে সুন্দরবন এলাকা। সেখানকার বেশিরভাগ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। সেই সব এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে হামলা চালানো হতে পারে। এই সব কারণে ২৪ ঘণ্টা সুন্দরবনের স্থল ও জলভাগে নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ।
বসিরহাটের স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত মোট ৯৪ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে জল সীমান্ত এলাকা ৫৫ কিমি। বাকি স্থলভাগ। এই এলাকাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে বিএসএফ। জওয়ানদের লক্ষ্য, এই এলাকা ব্যবহার করে কোনও জঙ্গি সংগঠন যে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে না পারে। অত্যাধুনিক র্যাডার, ড্রোন, নাইটভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করে এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছে বাহিনী। এছাড়াও আরও বেশি করে স্পিডবোটের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
সুন্দরবনের জলভাগে কোনও মৎস্যজীবীকে দেখা গেলে তাঁর থেকে পরিচয়পত্র দেখতে চেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসিরহাটে বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলেছে বসিরহাট পুলিশ জেলা। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকা দিয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভারতে প্রবেশ করেছিল। এই ঘটনার পর নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। এ বার ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের আবহে নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না আধিকারিকরা।
বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ডাঃ হোসেইন মেহেদি রহমান জানিয়েছেন, এলাকার নজরদারি নিয়ে নিয়মিত বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। সীমন্ত এলাকাগুলিতে বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি করা হচ্ছে পেট্রোলিং। সন্দেহজনক কোনও গতিবিধি লক্ষ্য করলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এর জন্য বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলেছে পুলিশ। পাশাপাশি গুজব রুখতেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে।