বিকাশ ভবনে চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর পুলিশের নির্মম লাঠিচার্জের অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাজ্য জুড়ে ধিক্কার দিবস পালনের ডাক দিলেন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর সদস্যরা। নাগরিক সমাজ থেকে বুদ্ধিজীবী মানুষদের তাঁদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি, রাজ্য জুড়ে শুক্রবার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে তাঁদের তরফে।
এই সংগঠনের আহ্বায়ক মেহবুব মণ্ডল বলেন, ‘যে ভাবে আমাদের উপর লাঠিচার্জ করা হলো, তার প্রতিবাদে আমরা আগামীকাল ধিক্কার দিবস পালন করব। আমরা প্রতিটি শিক্ষক, শিক্ষা কর্মীদের অনুরোধ করব, রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ রাখার জন্য।’
চাকরিহারা শিক্ষকদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দিনভর বিকাশ ভবনের সামনে উত্তেজনা ছড়ায়। এ দিন বেলা ১২টা থেকে বিকাশ ভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সকাল থেকেই চলে এই বিক্ষোভ অভিযান। মাঝে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত যাওয়ার পর উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। চাকরিহারা শিক্ষকরা দাবি করেন, সব্যসাচীর অনুগামীরা এ দিন পুলিশের সামনেই আন্দোলনকারীদের মারধর করেন। একাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন। রক্ত ঝরে শিক্ষকদের।
সন্ধ্যা নামতেই বিকাশ ভবন চত্বরে পুলিশের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তিনটে গেট অবরুদ্ধ হয়ে থাকার কারণে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এর পরেই পুলিশের লাঠিচার্জ শুরু হয় বলে অভিযোগ। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিকাশ ভবন চত্বরে। সরকারি কর্মীদের বের করে আনে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ বিকাশ ভবন চত্বরের সমানেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
চাকরিহারা শিক্ষকরা দাবি করেন, নতুন করে তাঁরা আর পরীক্ষায় বসতে রাজি নন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। শিক্ষা দপ্তরের কর্মীদের একাংশের ‘দুর্নীতি’র জন্যেই আজ পথে বসতে হয়েছে তাঁদের। প্রত্যেক যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক যাতে সসম্মানে তাঁদের পদে থাকতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার পুরো প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ার পর আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে শিক্ষকদের। আগামী ৩১ মে-এর মধ্যে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসএসসিকে।