নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: তিন মাস আগে সম্পত্তির জন্য মাকে খুন করেছিল শিলিগুড়ি শহরের দুর্গাদাস কলোনির এক যুবক। তিন মাসের মধ্যেই আত্মগ্লানিতে কঠিন পথ বেছে নিল সে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় মাকে খুনে অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দির ঝুলন্ত দেহ। সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম শ্রীকৃষ্ণ মহন্ত (৩৩)। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাদাস কলোনির বাসিন্দা ছিল সে।
সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শৌচাগারের দরজা ভেঙে ওই বন্দির দেহ দেখেন সংশোধনগারের কর্মীরা। অন্য কয়েদিদের থেকে জেলকর্মীরা জানতে পারেন, শৌচাগারের দরজা দীর্ঘক্ষণ বন্ধ। কয়েদিরা ওই শৌচালয় ব্যবহার করার জন্য বারবার ধাক্কাধাক্কি করলেও ভিতর থেকে সাড়া আসছিল না। এরপরই জেল সুপার সহ অন্যান্য কর্মীদেরকে খবর দেওয়া হয়। পরে শৌচালয়ের দরজা ভেঙে বিচারাধীন বন্দির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খবর যায় শিলিগুড়ি থানায়। পুলিস এসে আইনি প্রক্রিয়া মেনে ম্যাজিস্ট্রেট ডেকে সন্ধ্যায় দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সাধারণত বাজার করার জন্য ব্যবহৃত নাইলনের ব্যাগের যে হাতল থাকে তা ছিঁড়ে দড়ি বানিয়েছিল ওই বন্দি। এদিন শৌচাগারে ঢোকার সময় সেই দড়ি নিয়ে গিয়েছিল সে। জামা-কাপড় ঝোলানোর জন্য যে হুক ব্যবহৃত হয় তাতে ওই দড়ি দিয়ে ফাঁস তৈরি করে আত্মঘাতী হয়েছে সে। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
এই বিষয়ে শিলিগুড়ি সংশোধনাগারের সুপার সন্তোষ সরকার বলেন, আমরা এদিন সকালে ওই বন্দির ঝুলন্ত দেহ শৌচাগারে দেখি। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আইনানুগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেডিক্যালে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, এদিন ঘটনা ঘটার পর শিলিগুড়ি থানার পুলিস মৃত যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবকের মৃত্যুর ঘটনার পরেও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তার বিরুদ্ধে অসম্ভব ক্ষোভ জমে আছে। তার জেরে দেহ নিতে অস্বীকার করেছে পরিবারের সদস্যরা। উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মা মঞ্জু মহন্তকে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে খুন করার অভিযোগ ছিল ওই বিচারাধীন বন্দির বিরুদ্ধে। ঘটনার পরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সহ প্রতিবেশীরা তাকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছিল। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। শিলিগুড়ি সংশোধনাগারেই ছিল সে।