নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির জের। জল বাড়ছে তিস্তায়। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ক্রান্তির চ্যাংমারি পঞ্চায়েতের পশ্চিম দলাইগাঁও গ্রামে ঢুকে পড়েছে তিস্তার জল। সেখানে জলবন্দি ৬৮টি পরিবার। এখনও পর্যন্ত ওই পরিবারগুলির সদস্যরা বাড়িতে থাকলেও, আর কিছুটা জল বাড়লেই তাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ক্রান্তি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায় বলেন, চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম দলাইগাঁও গ্রামে ৬৮টি বাড়িতে তিস্তার জল ঢুকেছে। একটু জল বাড়লেই তাঁদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাঁধের উপর কিংবা কোনও আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত।
এদিকে, তিস্তা সহ বিভিন্ন পাহাড়ি নদীর জলস্তর বৃদ্ধির উপর নজরদারি চালাতে জলপাইগুড়িতে কন্ট্রোল রুম খুলেছে সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন। আগামী পয়লা জুন থেকে সেচদপ্তরের পক্ষে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে বলে জানানো হয়েছে। তিস্তায় জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় গজলডোবা ব্যারেজের গেট প্রয়োজন অনুযায়ী খোলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজের দু’টি গেট খুলে দেওয়া হয়। যার জেরে নদী তীরবর্তী কয়েকটি এলাকায় জল ঢুকে যায়। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিস্তাপাড়ের চাষাবাদ। মঙ্গলবারের পর বুধবার রাতেও জলপাইগুড়ি জেলায় সমতলে ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। সেইসঙ্গে সিকিম পাহাড়েও বৃষ্টি চলছে। এর জেরেই তিস্তায় জলস্তর কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, তিস্তায় জল বাড়ায় বাঁধ মেরামতির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। জলস্তর না নামলে চলতি মাসের মধ্যে বাঁধ সংস্কারের সব কাজ আদৌও শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সেচদপ্তরের কর্তারা।
জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমা মিলিয়ে বিভিন্ন নদীতে প্রায় দেড়শো জায়গায় বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। সবমিলিয়ে সাড়ে দশ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। সেচদপ্তরের উত্তরপূর্বের ভারপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, এমাসের মধ্যেই আমরা বাঁধ মেরামতির সমস্ত কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়েছি। কিন্তু সমতলের পাশাপাশি পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির জেরে তিস্তায় জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাঁধ সংস্কারের কাজে অসুবিধা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।