• উকিলের বাড়ি যাওয়ার পথে গ্রামবাসীর তাড়া, পালালেন সাত বিজেপি বিধায়ক
    বর্তমান | ১৬ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শীতলকুচি: বুধবার রাতে বাড়ি ফেরেন উকিল বর্মন। আর বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে আসার পথে গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে পালালেন বিজেপির সাত বিধায়ক। এই ঘটনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় পশ্চিম শীতলকুচি গ্রামে। পরে পুলিস পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

    বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে অপহরণের ২৯ দিন পর দেশে ফেরেন উকিল। রাতেই দেখা করেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন সহ অন্যরা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর বাড়িতে আসেন এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। দুপুরে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, বরেণচন্দ্র বর্মন সহ সাত পদ্ম বিধায়ক ফুলবাড়ি ক্যাম্পে বিএসএফ আধিকারিকদের ফুল-মিষ্টি দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। সেখান থেকে উকিলের বাড়ি আসার পথে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ান। উকিল বাড়িতে না থাকায় তাঁর পুত্রবধূর সঙ্গে দেখা করেই এলাকা ছাড়েন তাঁরা। এরপর মাথাভাঙা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিধায়করা। পরে মাথাভাঙা মহকুমা আদালত থেকে বেরনোর সময় উকিলবাবুর সঙ্গে দেখা করেন পদ্ম বিধায়করা। 

    তৃণমূলের শীতলকুচির ব্লক সভাপতি তপনকুমার গুহ বলেন, এতদিন পরিবারটি কী অবস্থায় আছে তার খোঁজ নেননি বিজেপির বিধায়ক ও নেতারা। এখন বাড়ি ফিরতেই লোক দেখানো নাটক করতে এসেছেন। স্থানীয় মানুষ এটা মেনে নিতে পারছে না। এই কারণেই তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। 

    শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, উকিলবাবুর পরিবারকে আশ্বস্ত করার বার্তা নিয়েই আমরা এসেছিলাম। কিন্তু আচমকাই রাস্তা আটকে দেওয়া হল যাতে আমরা দেখা করতে না পারি। টিএমসি’র স্থানীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই এসব হয়েছে। এই নোংরা রাজনীতির সঙ্গে সাধারণ মানুষকে জড়িয়ে বিধায়কদের উপর আক্রমণের চেষ্টা হল। এভাবে বিজেপিকে দমানো যাবে না। 

    কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া জানান, রাজ্য সরকারের তরফে যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েছেন। উকিলবাবুর পরিবারকে আমরা আর্থিক সহায়তা করেছিলাম। বাংলাদেশের কোর্টে জামিন পান তিনি। এরপর বিজিবি তাঁকে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। ওঁর ফেরার বিষয়ে বিএসএফ বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিস সুপার সন্দীপ গড়াই বলেন, মহকুমা আদালতে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই উকিলকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। 

    তবে বাড়ি ফিরলেও আতঙ্ক কাটেনি উকিলের। বলেন, চারজন বাংলাদেশি দুষ্কৃতী ভুট্টা খেতের ভিতর দিয়ে আমাকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি চিৎকার করে মাটিতে শুয়ে পড়লে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায়। তারা জানায়, ওদের লোককে নিয়ে গিয়েছে বিএসএফ। তাদের পেলে আমাকে ফেরত দেবে। ওপারে আমার চারবিঘা জমি আছে। আর চাষাবাদ করতে যাব না। উকিলের স্ত্রী সব্যবালা জানান, সকলের চেষ্টাতেই স্বামীকে ফিরে পেয়েছি। আর ওপারে যেতে দেব না।
  • Link to this news (বর্তমান)