নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খিচুড়িতে টিকটিকি! বৃহস্পতিবার ওন্দা ব্লকের পুনিশোল অঞ্চলের উপরডাঙা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খিচুড়িতে টিকটিকি পাওয়ার বিষয়টি এলাকায় রটে যায়। তারপর একের পর এক শিশু ‘অসুস্থ’ বোধ করতে থাকে বলে অভিভাবকরা দাবি করেন। ফলে পরপর তাদের ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন বিকেল পর্যন্ত ওই হাসপাতালে ৪০জন শিশু ও এক মহিলাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তবে তারা প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ওন্দা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকার কাছ থেকে এব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। খিচুড়ির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ফুড সেফটি বিভাগে পাঠানো হবে।
যদিও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে খিচুড়িতে টিকটিকি পাওয়ার বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ টিকটিকি পাওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ দেখাতে পারেনি বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) তথা আইসিডিএসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, টিকিটিকি পাওয়ার বিষয়টি গুজব বলেই আমরা জানতে পেরেছি। কেউ এটা রটিয়েছিল। তা অনেকে বিশ্বাস করেছিলেন। তার ফলে শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে বলে অভিভাবকরা দাবি করতে থাকেন। আমরা কোনও ঝুঁকি নিইনি। মা ও শিশু মিলিয়ে মোট ৪১জনকে ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারও শারীরিক সমস্যা ছিল না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে তিন বছরে খিচুড়িতে টিকটিকি পাওয়ার দাবি অনেকেই করেছেন। তবে কোনও ঘটনাতেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে টিকটিকি দেখতে পাওয়া যায়নি। সবক্ষেত্রেই খিচুড়ি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তা দেখা গিয়েছে বলে উপভোক্তারা দাবি করেছেন। ফলে ওইসব জায়গায় রান্না করার সময়েই যে খিচুড়িতে টিকটিকি পড়েছিল, তার কোনও প্রমাণ নেই।
পুনিশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সেহেরবানু বিবি খান বলেন, ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এক উপভোক্তা বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর খিচুড়িতে টিকটিকির পা, লেজের অংশ পেয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি বিষয়টি অন্যান্যদের জানান। অভিভাবকরা কেন্দ্রে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রথমে ১০জন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদেরও পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি খবর পেয়ে ওই কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। চিকিৎসার ব্যাপারে সকলকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে খাতড়া সহ অন্যান্য জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খিচুড়িতে টিকটিকি পাওয়ার অভিযোগ তুলে উপভোক্তারা সরব হন। শিশুর অভিভাবকরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, উদাসীনতার কারণে রান্নার সময় খিচুড়ির হাঁড়িতে টিকটিকি পড়ে গেলেও তা নজরে পড়ে না। তার ফলে তা খিচুড়ির সঙ্গে মিশে যায়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় কারও খিচুড়ির পাত্রে টিকটিকি পড়লে, তা ওইভাবে মিশে যাবে না বলেই উপভোক্তারা জানিয়েছেন।