• বরযাত্রীদের ঝামেলা, অস্ত্রের কোপে মৃত্যু যুবকের
    বর্তমান | ১৬ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: বিয়েবাড়িতে আনন্দের মধ্যে অস্ত্রের কোপে মৃত্যু হল এক যুবকের। মামাবাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বরযাত্রীদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা থামাতে গিয়ে ভোজালির কোপে মৃত্যু হল ভাগ্নে নীতীশ কুইরির (২১)। ঘটনায় জখম তাঁর মামাও। বুধবার রাতে ঝাড়খণ্ডের মামাবাড়ি থেকে মৃতদেহ বাঘমুণ্ডির গাগী গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয়রা। দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন পরিবারের সদস্য এবং এলাকার বাসিন্দারা। 

    বাঘমুণ্ডি থানার অন্তর্গত গাগী গ্রামের বাসিন্দা নীতীশ। তাঁর বাবা দেবেন কুইরি এবং মা সোনামনি কুইরি। দেবেনবাবুর দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাঁচিতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন নীতীশ। মামাবাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য রাঁচি থেকে তিনি ঝাড়খণ্ডের সোনাহাতু থানার রাহে আউটপোষ্টের অন্তর্গত বুকরুডি গ্রামে যান। তাঁর মা বিয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে সেখানেই ছিলেন। নীতীশের সম্পর্কিত কাকা তথা প্রতিবেশী যুগল কুইরি বলেন, আগেই খবরটা পেয়েছিলাম। তবে বুধবার রাতে মৃতদেহ গ্রামে আসার পরই বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানা গিয়েছে। যুগলবাবু বলেন, মামাবাড়ির লোকজনের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, অনেক রাত করে বরযাত্রীরা গ্রামে আসেন। বরকে তড়িঘড়ি সাদরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছিল। বরযাত্রীদের অনেকেই তখন বাইরে ছিলেন। সেসময় আচমকা কয়েকজন বরযাত্রীর নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা শুরু হয়। নীতীশ তা জানতে পেরে তাঁর মামা সন্তোষকে বিষয়টি জানান। তারপর তিনি নিজেই বরযাত্রীদের ঝামেলা আটকাতে সেখানে ছুটে যান। সেখানেই বরযাত্রীদের মধ্যেই একজন ভোজালির মতো ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে নীতিশকে কোপ মারে। ভাগ্নেকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর মামারও হাতে চোট লাগে। নীতীশ সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা নীতিশকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাঁচির হাসপাতালে বুধবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। 

    রাতেই নীতীশের নিথর দেহ বাঘমুন্ডির গাগী গ্রামে এসে পৌছয় এবং সেখানেই মৃতদেহ দাহ করা হয়। 

    নীতীশের বাবা দেবেন কুইরি বলেন, মেয়ের সঙ্গে গাগীর বাড়িতেই ছিলাম। স্ত্রী এবং ছেলেটা বিয়েবাড়িতে গিয়েছিল। বিয়ে বাড়িতে ঝামেলাতে নীতীশ জখম হয়েছে শুনে বুধবার সকালেই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বুকরুডি গ্রামে  যায়। সেখানেই গোটা বিষয়টি জানতে পারি। ছেলেটার প্রাণ এভাবে চলে যাবে, এটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না। সব শেষ হয়ে গেল। নীতীশের মা সোনামনিদেবী। ছেলের খুনের খবর পাওয়ার পর থেকেই বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বাড়িতেই চিকিৎসকের পরামর্শে স্যালাইন দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। যুগল কুইরি বলেন, আগেই মামাবাড়ি থেকেই ঝাড়খন্ড পুলিসকে জানানো হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার খুনের লিখিত অভিযোগ করা হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে চরম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

     মৃত নীতীশ কুইরি। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)