সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: বৃহস্পতিবার সাত সকালে সুতির মধুপুর থেকে এক যুবকের গলার নলি কাটা মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায়। সুতির চাঁদের মোড় সংলগ্ন মধুপুর রাজ্য সড়কের পাশ থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে মৃত যুবক এক বেসরকারি বিমা কোম্পানির এজেন্ট। পুলিস এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম আনন্দ রাজ (৩৫)। তাঁর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি সপরিবারে পাকুড়ে ভাড়া থাকতেন। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। সাত সকালে যুবকের গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধারে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
যুবকের দেহটি রাজ্য সড়কের পাশে কীভাবে এল তা নিয়ে ধন্দে সকলেই। সন্দেহ, যুবককে অন্যত্র খুন করে রাতের অন্ধকারে সড়কের ধারে ফেলে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তেমনটাই অনুমান স্থানীয় বাসিন্দাদের। তদন্তের স্বার্থে আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিস। তারা দুষ্কৃতীদের ধরতে তৎপর হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিস। এ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুরের পুলিস সুপার অমিতকুমার সাউ বলেন, আমাদের হাতে বেশ কিছু ক্লু এসেছে। যুবকের দেহ কীভাবে সড়কের ধারে এল, কে বা কারা ঘটনায় জড়িত সবটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে রাজ্য সড়কের পাশে দেহটি পিঠ মোড়া দিয়ে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। মৃতদেহের পরনে ছিল অফ হোয়াইট টি শার্ট ও হাফ প্যান্ট। হাতে লোহার বালা ও লাল সুতো বাঁধা ছিল। টি শার্টটি রক্তে ভিজে গিয়েছিল। মৃতদেহে মাছি ভনভন করছিল। তা দেখেই এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। খবর পৌঁছয় পুলিসের কাছে। পুলিস এসে দেহটি উদ্ধারের সময়ে দেখতে পায়, মৃতদেহের গলার নলি কাটা। ধারালো অস্ত্র দিয়েই গলার নলি কাটা হয়েছে বলে অনুমান। গলায় গভীর ক্ষত দেখা যায়। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, যুবককে খুন করা হয়েছে। খুনের পর রাতের অন্ধকারে গাড়িতে করে পাকুড় থেকে প্রায় ৬০ কিমি দূরে এই এলাকায় রাজ্য সড়কের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। দুষ্কৃতীরা প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যেই কয়েক কিমি দূরে দেহটি ফেলে পালিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত। মধুপুরের বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, দেহটি গলা কাটা অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে ছিল। স্থানীয়দের ফাঁসাতেই কেউ এই এলাকায় দেহটি ফেলে পালিয়েছে।
নিহত যুবক একটি বিমা কোম্পানির এজেন্ট ছিলেন। সম্প্রতি তিনি একটি ডাম্পারও কেনেন। বিমা কোম্পানির কাজের পাশাপাশি সেই ডাম্পারটিও দেখাশোনা করতেন। যুবকের এই পরিণতির কারণ নিয়ে ধন্দে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। তবে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই পরিবারের সদস্যদের দাবি। ঘটনার সঠিকভাবে তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। মৃতের আত্মীয় কৃষ্ণ ঠাকুর বলেন, আনন্দকে বুধবার রাত প্রায় সাড়ে দশটা পর্যন্ত পাকুড়েই দেখা গিয়েছে। রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে কথাবার্তাও বলেছেন। তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে রাতে আর ফেরেননি। আমরা ফোনে বিষয়টি জানতে পারি। কীভাবে এমনটা ঘটল তা আমরাও বুঝে উঠতে পারছি না। নিজস্ব চিত্র