• বাংলার বাড়ি: দ্বিতীয় ধাপে ৩৭৫ কোটি পেল পশ্চিম মেদিনীপুর
    বর্তমান | ১৬ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: মুখ্যমন্ত্রী স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি জেলা সফরে এসে দিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতিও। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের টাকা পাবেন উপভোক্তারা। এর ফলে উপকৃত হবে জেলার ৬২ হাজার ৫৯১টি পরিবার। দ্বিতীয় ধাপের জন্য খরচ হবে ৩৭৫ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার বেশি। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন ব্লকে টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে। এরপর ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পৌঁছে যাবে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ি পাচ্ছেন এই জেলার মানুষ। প্রথম পর্যায়ে জেলায় ১ লক্ষ ২ হাজার ১১০ জন বাড়ি পাচ্ছেন। বাড়ি তৈরির প্রথম ধাপের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬০৩ কোটি টাকা। তবে বিভিন্ন কারণে খুব কম সংখ্যক বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি। কেন শুরু হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বেশিভাগ ক্ষেত্রেই পারিবারিক সমস্যার জন্য বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।

    জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। বাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছেন আধিকারিকরা। দ্বিতীয় ধাপে টাকা পেয়ে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে এই জেলা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।

    জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা আটকে দেওয়ায় বহু পরিবার সমস্যায় পড়ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবার সেই সমস্যার সমাধান হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কথা দিলে কথা রাখতে জানেন।

    প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছিল বহু সাধারণ পরিবার। রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগেই দ্রুত গৃহহীনদের সমস্যার সমাধান করতে ময়দানে নামে। মুখ্যমন্ত্রী জেলার প্রশাসনিক অনুষ্ঠান থেকে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সম্পূর্ণ কাজটি যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয় সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যেজুড়ে ১২ লক্ষ মানুষ বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।

    প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ২০২১-›২২ সালে তৈরি হওয়া উপভোক্তাদের লিস্টের উপর জেলায় ৩ লক্ষের বেশি বাড়িতে সার্ভে করার কাজ শুরু করে প্রশাসন। এরপর ১ লক্ষ ২ হাজারের বেশি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, বাড়ি তৈরির জন্য দ্বিতীয় ধাপে শুধু কেশপুর ব্লকে ৫ হাজার ৯৯৪টি, কেশিয়াড়ি ব্লকে ৪ হাজার ৪৪২টি, সবং ব্লকে ৪ হাজার ৬৪৬টি, ডেবরা ব্লকে ৪ হাজার ৩৪২টি ও শালবনী ব্লকে ৩ হাজার ৩৪২টি পরিবার টাকা পাচ্ছেন। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, বাড়ি তৈরির কাজ একটা নির্দিষ্ট ধাপ পর্যন্ত শেষ করতে হবে। এরপর সেই কাজ পোর্টালে আপলোড করার পরেই মিলবে দ্বিতীয় ধাপের টাকা। বকেয়া টাকা বাড়িগুলো ধাপে ধাপে সরকারি নিয়ম অনুসারে পাবেন।

    কেশপুরের বাসিন্দা স্বপন দাস বলেন, কেশপুর ব্লকে বহু মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁরা বাড়ি পেয়ে খুব উপকৃত হচ্ছেন। দ্বিতীয় ধাপের টাকা পেলে বাড়ি তৈরির কাজে গতি আসবে। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
  • Link to this news (বর্তমান)