• ভুয়ো নথি দেখিয়ে ঋণ নিয়ে চম্পট, ধৃত রেলকর্মী
    বর্তমান | ১৬ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রেল, জাদুঘরের মতো কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসের কর্মচারীদের একটা বড় অংশ জাল নথি দিয়ে ঋণ নেওয়ায় অভিযুক্ত! এমনকী তাঁরা ঋণ পরিশোধও করেননি বলে অভিযোগ। একটি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে লালবাজার। ইতিমধ্যেই পলাশ মুখোপাধ্যায় নামে রেলের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। বাকিদের বিষয়ে খোঁজখবর চলছে।

    লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা অভিযোগ জানিয়ে বলে, তাদের থেকে ঋণ নিয়ে টাকা পরিশোধ করছেন না অনেকেই। বারবার নোটিস পাঠিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সংশ্লিষ্ট অফিসে গেলে ঋণ গ্রহীতাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তার ভিত্তিতে জালিয়াতি, প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় কেস রুজু করে পার্ক স্ট্রিট থানা। পরে তদন্তভার হাতে নেয় গোয়েন্দা বিভাগ। তারা তদন্তে নেমে ঋণ গ্রহীতাদের তালিকা সংগ্রহ করে। দেখা যায়, এর মধ্যে একটা বড় অংশই কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় কর্মরত। সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তাঁরা সহজেই ঋণ পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ‘পার্সোনাল লোন’ নিয়েছেন। তদন্তকারীরা ঋণ গ্রহীতাদের জমা দেওয়া নথি তাঁদের অফিসে পাঠান যাচাইয়ের জন্য। সেই রিপোর্ট আসার পরেই তদন্ত নতুন দিকে মোড় নেয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, আবেদনকারীরা ভুয়ো নথি জমা দিয়েছেন। এমনকী, বাড়তি ঋণ পাওয়ার জন্য জাল পে-স্লিপ তৈরি করেছেন। আয়কর রির্টানের নথিও জাল করা হয়েছে। শুধু নিজেদের নামে নয়, এই কর্মীরা তাঁদের আত্মীয়স্বজনের নামেও ঋণ তুলেছেন। জাল নথি তৈরি করে তাঁদের সরকারি কর্মী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এখান থেকেই  পলাশ মুখোপাধ্যায় বলে একজনকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি যে সব কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি বলে অভিযোগ, তাঁদের বিষয়ে তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১২ জনের নাম উঠে এসেছে। যাঁরা সকলেই কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী বলে জানা গিয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই অংশের লোকজনের বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় এক কোটি। এই অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঋণ গ্রহীতারা এই টাকা অন্যত্র পাচার করেছেন কি না, তা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে  জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)