হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। জঙ্গিদের সঙ্গে বা জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে কারও ন্যূনতম যোগসূত্র পাওয়া গেলে তাকে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। তাকে অবিলম্বে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রয়োজনে অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে হবে।
পহেলগামের বৈসরনে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) রাজ্যগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে তাদের এই পরামর্শ কার্যকর করতে বলেছে। বিশেষ করে, যে সব রাজ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, সেই রাজ্যগুলোকে এ ক্ষেত্রে নিবিড় নজরদারি করতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের এই পরামর্শ আসার পর স্বভাবতই নড়েচড়ে বসেছে সব রাজ্যই। বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যগুলোয় ইতিমধ্যেই ধরপাকড় শুরু হয়েছে। বাংলা, অসম ও ত্রিপুরায় গত দেড়-দু’সপ্তাহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে।
বীরভূম থেকে দুই জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যে এর আগে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি সন্দেহে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের ফাইলগুলো নতুন করে খুলছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ।
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থাকে সব সময়েই। এ নিয়ে পুলিশ, গোয়েন্দা ও সেনা গোয়েন্দারা সতর্কবার্তা পান নিয়ম করে। কিন্তু বৈসরন ভ্যালিতে জঙ্গিরা যে বেছে বেছে পর্যটকদের (২৫ জন পর্যটক এবং তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে নিহত টাট্টুঘোড়ার এক জন সহিস) খুনের পরিকল্পনা করেছে, সে ব্যাপারে গোয়েন্দা–তথ্য ছিল না।
এই ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার ঘটনায় কার্যত কেঁপে গিয়েছে প্রশাসন। গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের কোনও কোনও মহল থেকে। তার পরেই ঠিক হয়, এত টুকুও আলগা দেওয়া যাবে না।
রাজ্যগুলোকে সতর্ক করার পাশাপাশি বলা হয়, জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে তদন্তে অতীতে সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের নাম এসেছিল, যাদের উপর নজরদারি চলছে, তাদের একাংশকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে জঙ্গি–লিঙ্ক সম্পর্কে যতটা বেশি সম্ভব তথ্য জোগাড় করতে হবে।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি সংস্রবের অভিযোগ উঠলেও প্রমাণাভাবে যাঁরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন, তাঁদেরও নতুন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বীরভূমে জেএমবি-র যে দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা গত এক বছর ধরে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর নজরে ছিল। কেন্দ্রের নির্দেশ আসার পরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্রের খবর, এটি ছোট একটি মডিউল।
জেএমবি-র সদস্য এক বাংলাদেশির সঙ্গে ওই দু’জনের যোগাযোগ ছিল। একই ভাবে গত ২৭ এপ্রিল আগরতলায় গ্রেপ্তার করা হয় চার জন বাংলাদেশিকে। গত ৭ মে অসমের দক্ষিণ সালমারা জেলায় পাঁচ সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।