এই সময়: চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবন ঘেরাও করবেন, তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। ১০ তলা বিকাশ ভবনে সরকারি নানা বিভাগের কয়েক হাজার কর্মী–অফিসার কাজ করেন। প্রশ্ন উঠেছে, এ তথ্য কি পুলিশের কাছে ছিল না? পুলিশ তো জানত যে বিক্ষোভ হবে।
সকালে অফিসে ঢুকে কর্মীদের অনেকেই এ দিন রাত পর্যন্ত আটকে পড়েন। আটকে পড়েন ভিজ়িটার্সরাও। অথচ, বিকাশ ভবনের সামনে এ দিন দৃশ্যত কয়েকশো পুলিশকর্মী ও অফিসারদের দেখা গিয়েছে। সকাল থেকে ধুন্দুমার শুরু হলেও চুপ করে থাকতে দেখা গিয়েছে সেই পুলিশকর্মীদের।
আচমকাই সন্ধ্যা গড়াতেই তাঁদের ঘুম ভাঙে। স্কুলশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা, জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার, নারী ও শিশুকল্যাণ এবং সামাজিক ন্যায় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের পাশাপাশি বিভিন্ন ডিরেক্টরেট, মাদ্রাসা শিক্ষা ও ডিরেক্টরেট এবং সার্ভিস কমিশন, সমগ্র শিক্ষা মিশন, ইগনু, ভিজিল্যান্স, স্যাট, স্টেট গেজেটিয়ার এবং বন দপ্তরে কর্মরত কয়েক হাজার কর্মী–অফিসারদের উদ্ধারে অ্যাকশনে নামে পুলিশ।
পুলিশ মহলেই প্রশ্ন, এত বিলম্ব কেন?
কয়েক হাজার শিক্ষক–শিক্ষিকা, কর্মচ্যুত চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা যে ঘেরাও করতে আসছেন, তা তো জানা ছিল পুলিশের। প্রশ্ন উঠেছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত চাকরিহারা ‘যোগ্য’রা যখন পাঁচিল টপকে ও গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন, তখন কেন পুলিশের সক্রিয়তা দেখা যায়নি?
বিকেল পাঁচটা বাজতেই বিকাশ ভবনের কর্মীরা বেরোতে গিয়ে দেখেন সমস্ত গেট বন্ধ। বাইরে হুলস্থুল অবস্থা। সন্ধে হতেই এই কর্মীদের উদ্ধারে বিকাশ ভবনের তিনদিকের গেট খুলতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। ততক্ষণে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন সেখানে। উপস্থিত মিডিয়া।
এমনি সরাতে না পেরে অবরোধ হটাতে আচমকাই পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ শুরু করে। আহত ও রক্তাক্ত হন আন্দোলনকারীরা।পুলিশের দাবি, ভিতরে আটকে পড়া সরকারি কর্মীদের উদ্ধার করতেই লাঠি চালাতে বাধ্য হয়েছে তারা।
সল্টলেক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অনীশ সরকারের কাছে আন্দোলনরত ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি নিরুত্তর ছিলেন। পুলিশ সরকারি কর্মীদের উদ্ধারে ব্যর্থ হলে, তাঁদের অনেকেই পাঁচিল, লোহার গ্রিল টপকাতে গিয়ে নীচে পড়ে চোট পান।
সাধারণ পুলিশকর্মীদের প্রশ্ন, কেন সন্ধ্যার পরে তাঁদের সক্রিয় হতে নির্দেশ দেওয়া হলো! লাঠিচার্জের বদলে ‘যোগ্য’দের ঘেরাও–অবরোধ হটাতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করল না কেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে।