• চাকরিহারাদের বিকাশ ভবন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৬ মে ২০২৫
  • চাকরিহারাদের বিকাশ ভবন অভিযানকে ঘিরে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। আন্দোলনকারী ও তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তের অনুগামীদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীদের একাংশকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সব্যসাচী দত্তর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, চাকরিহারাদের কয়েকজন সব্যসাচীকে ধাক্কা মারে ও তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁকে ভিড়ের মধ্যে থেকে বের করে নিয়ে যেতে পুলিশকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। বিকেলের দিকে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, নতুন করে তাঁরা কোনও পরীক্ষা দেবেন না। মুখ্যমন্ত্রী সহ সব জনপ্রতিনিধিরা নতুন করে ভোটে জিতে এলে তবেই তাঁরা পরীক্ষা দেবেন। রাত পর্যন্ত বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানে রয়েছেন চাকরিহারাদের একাংশ। তাঁরা নিজেরা একটি তালা কিনে এনে গেটে লাগিয়ে দিয়েছেন। এর জেরে বিকাশ ভবনের ভিতরে আটকে রয়েছেন প্রায় শতাধিক কর্মী। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বিকাশ ভবনের সামনে গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছেন চাকরিহারারা।

    বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের সদস্যরা। সেই মতো সসম্মানে চাকরি ফেরানো সহ সাত দফা দাবিতে এ দিন বেলার দিকে শয়ে শয়ে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী বিকাশ ভবনের সামনে জড়ো হন। কিছু সময় পর ভবনের মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীদের একাংশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ। আন্দোলনকারী ও পুলিশকর্মীরা বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সেই সময় বিকাশ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত ও তাঁর অনুগামীরা। এর জেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অভিযোগ, চাকরিহারাদের একাংশ সব্যসাচীর দিকে তেড়ে যান। তাঁকে দেখে ‘চোর চোর’ স্লোগানও দেওয়া হয়। সব্যসাচীর অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হয়েছে। এমনকী তাঁর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, নিজস্ব একটি কাজে এ দিন বিকাশভবনে এসেছিলেন সব্যসাচী।

    বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে চাকরিহারারা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রীকে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সরকার কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তা জানাতে হবে। আর তা না হলে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি তাঁরা আর কোনও পরীক্ষা দেবেন না। আর পরীক্ষা দিতেই হলে আগে মুখ্যমন্ত্রী সহ সব জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নতুন করে জিততে হবে। তাঁদেরও যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। নিয়োগের নয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে আরও বড় পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের চাকরি সসম্মানে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে নিতে হবে।

    উল্লেখ্য, বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযানের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় পথনাটিকা করেছে চাকরিহারারা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, যাদবপুর এইটবি বাসস্ট্যান্ডের সামনে এই আয়োজন করা হয়েছিল।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)