চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন আর কোনও ‘ব্রেকিং নিউজ’ নয়। এই দ্বন্দ্বের আঁচ এখন এতটাই ছড়িয়েছে যে, অপহৃত কৃষক উকিল বর্মনকে বাংলাদেশ থেকে ছাড়িয়ে আনতে কে বেশি উদ্যোগী হয়েছিলেন, তা নিয়েও অঘোষিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই শিবিরের অনুগামীরা নিজেদের মতো করে ঢাক পেটাচ্ছেন।
বুধবার রাতে উকিল যখন বাড়ি ফেরেন সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক (হিপ্পি) এবং দলের জেলার চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। বেশ কয়েক ঘণ্টা তাঁরা শীতলখুচিতে ছিলেন।
সকাল হতেই সেখানে পৌঁছে যান হিপ্পির বিরোধী শিবিরের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তার সঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অনুগামী তৃণমূলের কিষান ক্ষেতমজদুর ইউনিয়নের জেলা সভাপতি খোকন মিঁয়া। উকিলের পরিবারের হাতে চাল, ডাল, তেল প্রভৃতি তুলে দিতে দেখা যায় পার্থপ্রতিমকে।
তাঁদের গোষ্ঠীর নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বিশেষ কারণে আসতে পারেননি। কিন্তু তিনি তাঁদের পাশেই রয়েছেন বলে ওই কৃষকের পরিবারকে জানান প্রাক্তন সাংসদ। এ দিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর অনুগামীরা ময়দানে নামেন। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় উকিল বর্মনের ফিরে আসাকে উদয়ন গুহর চেষ্টা বলে উল্লেখ করেন।
এরই মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কারও নাম না করে অপহৃতের প্রসঙ্গ টেনে কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি, মুর্তি ভাবে আমি দেব হাসেন অন্তর্যামী।’
পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘উকিলকে ফিরিয়ে আনতে রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় তিনি ২৯ দিন পড় বাড়ি ফিরে এসেছেন।’
এর আগে উকিল বর্মনের নামে মদনমোহন বাড়িতে পুজো দিয়েছিলেন রবি। তিনি ফিরে আসা না পর্যন্ত পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। উকিল ফিরে আসায় যেমন তাঁর পরিবার–সহ গোটা জেলা তথা রাজ্যে স্বস্তির আবহাওয়া।
তেমনি শাসকদলের গোষ্ঠীবাজির চোরাস্রোতও রয়েছে। উকিলের ফিরে আসার কৃতিত্ব নিতে দু’পক্ষই তৎপর হয়ে উঠেছে। যদিও এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরিন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ‘দ্বন্দের কোনও ব্যাপার নেই। এখানে ব্যক্তিগত কোনও বিষয়ই নেই। বিপদের সময় উকিলের পরিবারের পাশে দলমত নির্বিশেষে সকলেই দাঁড়িয়েছে।’