• ‘মিনিমাম বলপ্রয়োগ…’, চাকরিহারাদের আন্দোলনে লাঠিচার্জের ঘটনায় ব্যাখ্যা পুলিশের
    এই সময় | ১৬ মে ২০২৫
  • ‘পুলিশ সংযত ছিল, অনুরোধ করলেও শোনেননি আন্দোলনকারীরা’। চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর লাঠিচার্জ নিয়ে কার্যত আন্দোলনকারীদের উপর দায় চাপালেন ADG দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তবে একইসঙ্গে বলপ্রয়োগের কথা মেনে নিলেন তিনি। ADG দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন,‘ভিতরে আটকে থাকা নিরপরাধ, অসুস্থ, আটকে পড়া ৫০০-৭০০ মানুষকে উদ্ধার করতে সামান্য বলপ্রয়োগ করতে হয়েছিল। আন্দোলনকারীদের সরাতে যতটুকু বলপ্রয়োগ না করলেই নয়, ততটুকুই করা হয়েছিল। এ কথা মানতে কোনও দ্বিধা নেই।’

    বিকাশ ভবনে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্দোলনের প্রকৃতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল পুলিশ প্রশাসন। এ বিষয়ে ADG দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকারের মন্তব্য, ‘৫০০-৭০০ নিরীহ মানুষকে আটকে রেখে যে আন্দোলন চলে তা কখনও গণতান্ত্রিক হতে পারে না।’ তাঁর দাবি, সকাল থেকে সংযত ছিল পুলিশ। এমনকী সকালেও যখন আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে আসেন তখনও পুলিশ কিছু করেনি বলেই দাবি করেন তিনি।

    ADG দক্ষিণবঙ্গের কথায়, দীর্ঘ সাত ঘণ্টা ধরে আন্দোলনকারীদের বহু অনুনয় বিনয় করা হলেও তাঁরা পুলিশের কথায় কর্ণপাত করেননি। সমস্যা তৈরি হয় যখন বিকালে বিকাশ ভবনের কর্মচারীরা বাড়ি যেতে চান। তাঁদের বার হতে দেননি আন্দোলনকারীরা বলে অভিযোগ। ভিতরে আটকে পড়েন প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ কর্মচারী। পুলিশ তাদের বার বার মাইকিং করে বার বার অনুরোধ করলেও তারা নিজেদের অবস্থান থেকে সরেননি।

    অন্যদিকে পুলিশের দাবি, ভিতরে আটকে পড়া সরকারি কর্মীরা অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেখানে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাও ছিলেন, তিনি রীতিমতো অসুস্থ হয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন। এ ছাড়াও আতঙ্কে এক কর্মী বাড়ি যাওয়ার জন্য ম্যাজাইন ফ্লোর থেকে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে আহতও হন। এর পরই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। লাঠিচার্জের আগে যাবতীয় প্রোটোকল মানা হয়েছে বলে পুলিশ প্রশাসনের দাবি।

    রাজ্য পুলিশের এডিজি জাভেদ শামিমও লাঠিচার্জের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন,‘বিকাশ ভবনে বহু সরকারি অফিস রয়েছে। সেখানে আটকে পড়া কর্মচারীদের বার করতে মিনিমাম বলপ্রয়োগ করতে হয়েছে।’ একইসঙ্গে ADG দক্ষিণবঙ্গের সাফাই, ‘পুলিশের বলপ্রয়োগ করার কোনও অভিপ্রায় ছিল না। তা থাকলে সকালে গেট ভাঙার সময়ই করতে পারত পুলিশ।’ সাংবাদিক বৈঠকেই সুপ্রতিম সরকার জানালেন, আন্দোলনকারীদের আক্রমণে আহত হয়েছেন ১৯ জন পুলিশ কর্মী। পুলিশের উপর আক্রমণ করেছেন যারা, সিসিটিভি দেখে তাদের চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    অন্যদিকে, পুলিশ ‘মিনিমাম বলপ্রয়োগ’-এর কথা বললেও একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বহু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে কারও হাত ভাঙা, কারও শরীরে গভীর আঘাতের চিহ্নও দেখা গিয়েছে। যদিও এই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন। এদিন সকালেও ব্যান্ডেজ নিয়েই আন্দোলনে সামিল হতে দেখা গিয়েছে চাকরিহারা শিক্ষকদের। তাদের আন্দোলনের উপর পুলিশি লাঠিচার্জ নিয়ে ইতিমধ্যেই দায়ের জনস্বার্থ মামলা।

    তথ্য সহায়তা: সোমনাথ মণ্ডল

  • Link to this news (এই সময়)