• দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে ১৫ দিনে প্রণামীর পরিমাণ ৯ লক্ষ ছাড়াল
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৬ মে ২০২৫
  • দিঘার মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। প্রথম চার দিনেই দর্শনার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ১৫ দিনে প্রণামীর পরিমাণ ছাড়াল ৯ লক্ষ টাকা। মূল বিগ্রহের সামনে একটিই মাত্র প্রণামীবাক্স। কিন্তু ভিড়ের ঠেলায় সেখানে অনেকেই পৌঁছতে পারছেন না। সেই কারণে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের জন্য আরও ১০টি প্রণামীবাক্স তৈরি করার বরাত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    সেই দিই দর্শকদের জন্য মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকে সময় যত যাচ্ছে, ভিড়ও ক্রমেই বাড়ছে। শনি-রবি ভিড়ের কারণে মন্দির দর্শনে সময়ও বেশি লাগছে। দিঘার জগন্নাথধাম ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য তথা ইস্কন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস জানিয়েছেন, প্রতি মঙ্গলবার প্রণামীর বাক্সের অর্থ গোনা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই অর্থের পরিমাণ হয়েছে ৯ লক্ষ টাকার কিছু বেশি।

    মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, সিসিটিভি-র নজরদারিতে সাধারণ কার্যপ্রণালী (এসওপি) মেনেই প্রণামী বাক্সের অর্থ গোনা হচ্ছে। শাসনিক আধিকারিক, ব্যাঙ্কের কর্মচারী, ইস্কনের তরফে কোনও সন্ন্যাসী এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের উপস্থিতিতে গণনা হচ্ছে। মঙ্গলবার গণনা করতে গিয়ে দেখা যায়, ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা শুধু মুদ্রাতেই উঠেছে। এছাড়া ১০, ২০, ৫০, ১০০ টাকার নোটও রয়েছে।

    সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর ১টার সময়ে প্রণামী গণনা শুরু হয়েছিল। শেষ হয় রাত্রি ৮টায়। ভিড়ের জন্য হাজার হাজার মানুষ প্রণামীবাক্সের সামনে পৌঁছোতেই পারছেন না। সেই কারণে মন্দিরের বিভিন্ন অংশে ১০টি প্রণামী বাক্স রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে মূল বিগ্রহের সামনে থাকা প্রণামী বাক্সের পাশাপাশি অন্য বাক্সগুলিতেও প্রণামী দিতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি বাক্সগুলিতে দুটি করে তালা থাকবে।

    দিঘার মন্দিরে ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের। সেই কারণে ইতিমধ্যেই রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তক্রমে জেলা পুলিশ শুধু দিঘার মন্দিরের জন্য ১০০ জন ভলান্টিয়ার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বাইরের কেউ নন, রামনগর বা দিঘা কোস্টাল থানা এলাকার বাসিন্দারাই ওই কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর ফলে স্থানীয় ছেলেরা কাজ পাবে বলে আশা করছে প্রশাসন।

    প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় ২০১৮ সালে পুরীর আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ মন্দিরের জন্য ২০ একর জমি প্রদান করেছিল। মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব হিডকোকে দেওয়া হয়। এই মন্দিরের নির্মাণ কাজের ব্যয় ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। মন্দিরের উচ্চতা ৬৫ মিটার (২১৩ ফুট)। এই মন্দিরটি নির্মাণে রাজস্থানের বংশী পাহাড়ের বিখ্যাত বেলেপাথর ব্যবহার করা হয়েছে।

    দিঘা জগন্নাথ মন্দিরের জন্য মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ড (অছি পরিষদ) তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে রয়েছেন চারজন সনাতনী প্রতিনিধি, পুরীর মন্দিরের পাঁচ জন এবং চার জন স্থানীয় পুরোহিত। পুরীর রথযাত্রার নিয়ম মেনে এই মন্দিরেও রথ বেরনোর আগে সোনার ঝাঁটা দিয়ে ঝাঁট দেওয়া হবে। দিঘার মন্দিরের সোনার ঝাঁটার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)