বীরভূম ও উত্তর কলকাতা—জেলা সভাপতি পদটাই রাখল না তৃণমূল কংগ্রেস। দুই জেলাতেই ‘নবরত্ন’-এর উপর ভরসা রাখছে শাসক দল। জেলা চেয়ারপার্সনদের পাশাপাশি জেলার সংগঠন সামলাবে নয় জনের কোর কমিটি। বীরভূম মডেল প্রতিফলিত হলো উত্তর কলকাতাতেও। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনদের নতুন তালিকা আতসকাঁচের তলায় ফেললে দেখা যাচ্ছে সব মিলিয়ে প্রায় ১৮টি সাংগঠনিক জেলায় রদবদল হয়েছে কিছু পদে।
বীরভূমের এক সময়কার ‘বেতাজ বাদশা’ অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পরেই জেলার সংগঠন সামলানোর জন্য কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল নেতৃত্ব। সেই কোর কমিটিতে রয়েছেন অভিজিৎ সিনহা, অনুব্রত মণ্ডল, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায় চৌধুরী, চন্দ্রনাথ সিনহা, কাজল শেখ, সুদীপ্ত ঘোষ এবং দুই সাংসদ শতাব্দী রায় ও অসিত মাল। সেই মডেল অনুসরণ করা হলো উত্তর কলকাতাতেও।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই আসন বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল দলের অন্দরেই। সেখানেই এ বার জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে জেলার চেয়ারপার্সন করা হলো সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এখানেও তৈরি নতুন কোর কমিটি। যার সদস্যরা হলেন — অতীন ঘোষ, জীবন সাহা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, পরেশ পাল, শশী পাঁজা, সুপ্তি পান্ডে, স্বপন কর্মকার, স্বর্ণকমল সাহা ও বিবেক গুপ্তা।
মালদা জেলা চেয়ারপার্সন ছিলেন রতুয়া বিধানসভার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। তার জায়গায় নতুন চেয়ারপার্সন হলেন চৈতালি সরকার (নিহত কাউন্সিলার বাবলা সরকারের স্ত্রী)।
বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল চেয়ারপার্সন ছিলেন রবিউল আলম চৌধুরী। সেই জায়গায় এলেন হরিহরপুর বিধায়ক নিয়ামত শেখ। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি করা হয়েছে বুরহানুল মুকাদ্দিন (লিটন) কে। আগে ছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম। উত্তর ২৪ পরগনা দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস রায় দলত্যাগের পর এই পদে বসানো হয়েছে পার্থ ভৌমিককে।
অন্যদিকে, হাওড়া সদরের সভাপতি কল্যাণ ঘোষকে সরিয়ে গৌতম চৌধুরীকে করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে লগনদেও সিংয়ের পরিবর্তে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের মন্ত্রী এবং জেলার প্রবীন নেতা অরূপ রায়কে নিয়ে আসা হলো।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব পেলেন বয়সে নবীন তারাশঙ্কর রায়। এতদিন দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন প্রবীণ নেতা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। অন্যদিকে সুব্রত দত্তকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি পদে ছিলেন আশিস হুদাইত। সেই জায়গায় এলেন অজিত মাইতি।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদের কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। চেয়ারম্যান ছিলেন তরুন মাইতি আর সভাপতি পীযুষ কান্তি পন্ডা। তবে তমলুক সাংগঠনিক জেলায় পরিবর্তন ঘটেছে। তমলুক সাংগঠনিক জেলায় চেয়ারম্যান ছিলেন চিত্ত মাইতি। তাঁর পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দীপেন্দ্র নারায়ণ রায়কে। তিনি বর্তমানে তমলুক পুরসভার চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন৷ সভাপতি ছিলেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জায়গায় দায়িত্ব পেলেন পাঁশকুড়া ব্লকের ব্লক সভাপতি এবং পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতি সহ সভাপতি সুজিতকুমার রায়।