কৌশিক দে
দুষ্কৃতীদের গুলি ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার বাবলা সরকারকে। মালদার কাউন্সিলার হত্যার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। একজন জনপ্রতিনিধিকে এ ভাবে প্রকাশ্যে গুলি করে মারার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। নিহত কাউন্সিলার বাবলার স্ত্রী চৈতালি সরকার দলের একাংশের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চৈতালিকে এ বার দলের সাংগঠনিক পদ ‘উপহার’ দিল তৃণমূল। মালদার জেলা চেয়ারপার্সন হলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদায় এসে নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে তাঁর স্বামীর অসম্পূর্ণ কাজের দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন। বাবলা সরকার খুনের প্রায় পাঁচ মাসের মাথায় এ বার তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যানের পদের দায়িত্ব দেওয়া হলো তাঁকেই। বর্তমানে চৈতালি ইংরেজবাজার পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। পাশাপাশি তিনি শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্যও রয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে চৈতালি সরকারের চেয়ারম্যান হওয়ার নির্দেশের নোটিস পাঠানো হয়েছে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। একইভাবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে বহাল থাকলেন মালতিপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি।
মালদা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে এতদিন দায়িত্বে ছিলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। বয়স হয়েছিল আশি বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ রয়েছেন সমর। সেই কথা মাথায় রেখেই দলের শক্তি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন শাখা সংগঠনকে চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে এ বার মহিলা মুখের উপরেই ভরসা রাখলেন নেত্রী। চৈতালি সরকার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। সবরকম ভাবে আমি দলের জন্য কাজ করে যাব।’
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি ইংরেজবাজার পুরসভার মহানন্দাপল্লি এলাকায় নিজের একটি পাইপ ফ্যাক্টরির সামনে দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃত্যু হয় তৃণমূলের জেলার সহ-সভাপতি তথা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বাবলা সরকারের। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিহারের তিন পেশাদার খুনি-সহ মোট নয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাবলা সরকার খুনের ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন একদা ইংরেজবাজার টাউন তৃণমূলের সভাপতি তথা সংশ্লিষ্ট পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং এক সময়ের বাম নেতা স্বপন শর্মা।
তৃণমূলের নতুন চেয়ারপার্সনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সিও। নতুন তালিকা প্রকাশের পর আব্দুর বলেন, ‘রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে চৈতালিকে দলের জেলার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।’