• নো পার্কিং জোনে গাড়ি রাখার ফাইন সাড়ে দশ হাজার টাকা!
    বর্তমান | ১৭ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের দাদাগিরি! জেলা শাসকের অফিস চত্বরে যত্রতত্র বাইক রাখার ‘অপরাধে’ জরিমানা করা হল মোটা টাকা। কাউকে সাড়ে ছ’হাজার টাকা, কাউকে সাড়ে দশ হাজার টাকা! পার্ক করে রাখা বাইকে কেস দেওয়া হল হেলমেট না পরে গাড়ি চালানোর! শুক্রবার দুপুরে এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায় জেলাশাসকের অফিস চত্বরে।পরিবহণ কর্তারা অবৈধ উপায়ে টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

    ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিত্সার জন্য স্বাস্থ্যসাথীতে কী সুবিধা আছে, তা জানতে এদিন বাইক নিয়ে জেলাশাসকের দপ্তরে এসেছিলেন কাশীপুরের ঘুটলিয়ার বাসিন্দা শিবদাস মাহাত। কাজ মিটিয়ে বাইরে এসে দেখেন, বাইকের হ্যান্ডেলে একটি রসিদ গোঁজা। তাঁকে ছ’হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। লাইসেন্স না থাকার জন্য পাঁচ হাজার টাকা এবং হেলমেট না পরে গাড়ি না চালানোর জন্য হাজার টাকা।মায়ের ক্যান্সারের চিকিত্সার বিপুল খরচ, তার উপর জরিমানার অঙ্ক দেখে মাথায় হাত তাঁর। শুধু শিবদাস নন, সুরুলিয়ার বাসিন্দা দীপু পাঠক, কেতিকার সোমা দাস, বর্ধমানেরমহম্মদ জহিরউদ্দিনেরওঅভিযোগ একই। দীপু ও সোমাকেও একইভাবে লাইসেন্স, হেলমেট এবং নো পার্কিং মিলিয়ে সাড়ে ছ’হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জহিরউদ্দিন বর্ধমান থেকে পুরুলিয়ার ট্রেজারি অফিসে এসেছিলেন। তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে সাড়ে দশ হাজার টাকা। জেলাশাসকের দপ্তরেই চাকরি করেন সোমা মাহাত। তাঁকেও সাড়ে ছ’হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।জয়ন্ত বিশ্বাস নামের একমোটর ভেহিকেল ইনস্পেক্টর এই জরিমানা করেছেন। পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের দাবি, জেলাশাসকের অফিসে অনেকেই অবৈধভাবে গাড়ি পার্ক করে বাজার করতে চলে যান। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই এই অভিযান। কিন্তু তার জন্য সাড়ে ছ’হাজার টাকা জরিমানা? যাঁদের জরিমানা করা হয়েছে তাঁদের প্রশ্ন,যেখানে গাড়ি রেখেছিলাম সেই জায়গাটা যদি ‘নো পার্কিং’ জোন হয়, তাহলে সেই কেস দিক। নো পার্কিংয়ের জন্য জরিমানা পাঁচশ টাকা। কিন্তু একটি দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির বিরুদ্ধে কীভাবে লাইসেন্স ও হেলমেট না পরে গাড়ি চালানোর কেস দিতে পারে? কীসের ভিত্তিতে এতটাকা জরিমানা করা হল?বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে প্রশাসনিক মহলেও। 

    প্রশাসন সূত্রের খবর, যে আধিকারিক এই জরিমানা করেছেন তাঁকে এই কাজের জন্য ধমকও দিয়েছেন শীর্ষ কর্তারা। ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ পুরুলিয়া সদরের মহকুমা শাসক উত্পল ঘোষ। তিনি বলেন, এক নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, আর এক করে বসে রয়েছেন।’জেলা পরিবহণ আধিকারিক অর্ণব চিন্না বলেন, যত্রতত্র গাড়ি রাখা নিয়ে যে অভিযোগ আসছিল, ওই অফিসারকে শুধুমাত্র তা দেখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি যা করেছেন, তা একবারই করা যায় না। যাঁদের ‘ভুল’ কেস দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সাত দিনের মধ্যে পরিবহণ দপ্তরে লাইসেন্স নিয়ে এলে জরিমানা কমিয়ে দেওয়াহবে।
  • Link to this news (বর্তমান)