• পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের সভাপতি বদল হল
    বর্তমান | ১৭ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও আরামবাগ: জল্পনা চলছিল বহুদিন ধরেই। অবশেষে জেলায় জেলায় সাংগঠনিক রদবদল করল তৃণমূল। পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান উভয় পদেই পরিবর্তন আনল তৃণমূল। সভাপতি পদে সৌমেন বেলথরিয়াকে সরিয়ে বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে হংসেশ্বর মাহাতকে সরিয়ে পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ শান্তিরাম মাহাতর উপরেই আস্থা রেখেছেন দলনেত্রী। সৌমেন ও হংসেশ্বরকে রাজ্য কমিটির সম্পাদক করা হয়েছে। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদ থেকে সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীকে সরিয়ে তারাশঙ্কর রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী অনুসূয়া রায় বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি। চেয়ারম্যান পদে বহাল রয়েছেন অলোকা সেন মজুমদার। বিষ্ণুপুরের জেলা সভাপতি পদেও পরিবর্তন করা হয়েছে। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়েছে তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়। তবে চেয়ারম্যান পদে স্বপন নন্দীকে সরিয়ে সাংসদ মিতালি বাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

    বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপবাবু বলেন, দল আমাকে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক করেছে। তার জন্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। বিধানসভা ভোটের আগে দায়িত্ব আরও বাড়তে পারে।

    প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি সৌমেনকে নিয়ে দলের নেতাদের একাংশের ক্ষোভ ছিলই। লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া আসনে হারের পর তা আরও বেশি করে মাথাচাড়া দেয়। তাঁকে সরাতে একজোট হয়েছিলেন জেলার নেতারা। সৌমেনের বিরুদ্ধে ১১জনের সই সম্বলিত চিঠি পৌঁছেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। চিঠিতে সই করেছিলেন জেলার একাধিক বিধায়ক, বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সভাপতি, প্রাক্তন মন্ত্রী থেকে জেলা পরিষদের শীর্ষ পদাধিকারীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সবাইকে নিয়ে চলতে ব্যর্থ সৌমেন। ব্লকে ব্লকে বেড়েছে গোষ্ঠী কোন্দল। লোকসভা নির্বাচনেও নাকি সক্রিয় ভূমিকা দেখা যায়নি সৌমেনকে। যে কারণে পুরুলিয়ায় জিততে পারেনি তৃণমূল। ফলে তাঁকে সরানো যেন শুধুমাত্র সময়েরই অপেক্ষা ছিল। 

    তবে, সৌমেনের পরিবর্তে নাম ভাসছিল অনেকেরই। কিন্তু, জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজীবলোচন সোরেনের উপরেই ভরসা রাখল দল। সূত্রের খবর, গত লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ার বিজেপির দাপট সত্ত্বেও নিজের বিধানসভা এলাকায় দলকে প্রায় ২৮ হাজার ভোটে লিড দিয়েছিলেন রাজীব। তারই পুরস্কার তিনি পেলেন বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। রাজীববাবু বলেন, আমাকে এই গুরুদায়িত্ব দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানাই। যে দায়িত্ব দল দিয়েছে, তা পালন করব। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হাতে থাকা আসনগুলি পুনরুদ্ধারের কাজ আজ থেকেই শুরু করব। অন্যদিকে সৌমেন বলেন, দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মাথা পেতে নিলাম। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে বিক্রমজিৎ চট্টোপাধায়কে সরিয়ে সুব্রত দত্তকে দায়িত্ব দিয়েছে দল। সুব্রত এতদিন বিষ্ণুপুরের যুব সভাপতি ছিলেন। বিক্রমজিৎকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বিষ্ণুপুরের রাজনীতি বারংবার আবর্তিত হতো বড়জোড়া থেকে। এনিয়ে ক্ষোভ ছিল দলের একাংশের। পাত্রসায়রের বাসিন্দা সুব্রতকে দায়িত্ব দিয়ে সেই ক্ষোভ প্রশমিত করল দল। এনিয়ে দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।

    • পুরুলিয়ায় সভাপতি বদল হতেই উচ্ছ্বাস তৃণমূল শিবিরে। রঘুনাথপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র 
  • Link to this news (বর্তমান)