নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: এর আগে দেশ বিদেশের বিভিন্ন পর্বতশৃঙ্গ জয় করেছিলেন বর্ধমানের বাসিন্দা সৌমেন সরকার। ২০ বছর ধরে তিনি পাহাড়ী পথে লড়াই করছেন। তবে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযান না হওয়ায় সফলতা এতদিন পূর্ণতা পায়নি। অনেক দিন ধরেই তিনি সেই শিখরে পৌঁছনোর টার্গেট নিয়েছিলেন। অবশেষে সফল হলেন রাজ্যের পূর্তদপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌমেনবাবু। শুক্রবার সকালে শহরে তাঁর মাউন্ট এভারেস্ট জয় করার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত শহরের রানিসায়রের বাসিন্দারা। এখানেই থাকেন বছর পঞ্চান্নর সৌমেনবাবু। মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, এর আগে রাশিয়ার মাউন্ট এলব্রস জয় করেছিলাম। এছাড়া মাউন্ট দেওতিব্বা, মাউন্ট ইউনিম জয়ও হয়ে গিয়েছে। মাউন্ট এভারেস্ট জয় করার প্রস্তুতি অনেক দিন ধরেই নিয়েছি।
পর্বত শৃঙ্গ জয়ের পাশাপাশি সৌমেনবাবুর ম্যারাথনে অংশ নেওয়া অন্যতম প্যাশন। এলাকায় কোথাও দৌড় প্রতিযোগিতা হলেই তিনি হাজির হয়ে যান। বহু পুরষ্কারও জিতেছেন। তিনি জানিয়ে ছিলেন, হিমাচল প্রদশের মাউন্ট দেওতিব্বা অভিযানে গিয়ে সমস্যা হয়েছিল। সেখানে প্রতিকূল আবহাওয়া ছিল। ২০২২ সালে আর একটি শৃঙ্গ অভিযান করতে গিয়ে তুষার ঝড়ের মুখে পড়তে হয়ছিল। টার্গেটের ১০০ মিটার আগে থেকেই ফিরে আসতে হয়েছিল। জীবনে সব সময় সফল হয়েছেন, এমনটা নয়। বহুবার অসফলও হয়েছেন। কিন্তু পাহাড়ী পথ হাঁটা ছাড়েননি। কার্গিল, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশের বিভিন্ন পর্বতশঙ্গ জয় করেছেন। তাঁর কথায়, বড় টার্গেটে পৌঁছতে গেলে ব্যর্থতা আসবেই।
মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে যাওয়ার আগে বেসক্যাম্প থেকে তিনি নিকটজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। অনেককেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছবিও পাঠাতেন। কিন্তু অভিযান শেষ হওয়ার পর তাঁকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। এই শৃঙ্গ অভিযান করতে যাওয়ার আগে তাঁকে অনেক কসরত করতে হয়েছিল। স্পনসর জোগাড় করতেও বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। সৌমেনবাবু ১ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হন। ৭ এপ্রিল থেকে অভিযান শুরু হয়। বর্ধমান থেকে তিনি শিলিগুড়ি পৌঁছন। সেখান থেকে তিনি কাঠমাণ্ডু যান। অভিযানের জন্য তাঁকে নেপাল সরকারের কাছে মোটা অঙ্ক টাকা জমা করতে হয়। নেপাল সরকার হেলিকপ্টার ও ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি করে। তাঁর শেরপা ছিলেন দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা। এই শেরপা এর আগে আটবার মাউন্ট এভারেস্ট পৌঁছেছেন। সৌমেনবাবুর বর্ধমানের বাড়িতে স্ত্রী এবং মেয়ে থাকেন। যদিও কিছু দিনের জন্য তাঁরা কলকাতায় রয়েছেন। এদিন বর্ধমানের বাড়িতে কেউ ছিলেন না। প্রতিবেশীরা বলেন, সৌমেনবাবু বর্ধমানের গর্ব। বহুদিন ধরেই তিনি অভিযান চালাচ্ছেন। অবশেষে তিনি সাফল্যের চূঁড়ায় পৌঁছলেন। সৌমেন সরকার