নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: প্রকাশ্য রাস্তায় স্কুল শিক্ষকের দাদাগিরি! ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে আচমকাই মারধর। সিউড়ির সুপরিচিত একটি স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় হতবাক সাধারণ মানুষ। সিউড়ি থানার পুলিস অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে। মারধরে জখম সিভিক ভলান্টিয়ারের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয় সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। শুক্রবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিউড়ি শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
নিত্যদিনের মতো এদিনও সিউড়ি শহরের বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ট্রাফিক সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার কৃষ্ণগোপাল মণ্ডল। সে সময়ে ওই স্কুল শিক্ষক বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছন। শুরুতেই ওই শিক্ষক সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম পরিচয় জানতে চেয়ে ধমক ও গালিগালাজ শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরপর আচমকাই সিভিককে মারধর শুরু করেন। ঘটনায় তাঁর গলায় ও মুখে আঘাত লেগেছে। এছাড়াও হাতের ঘড়ির ফিতেও ছিঁড়ে গিয়েছে। জখম সিভিক ভলান্টিয়ার হতভম্ভ হয়ে যান। তাঁর কথায়, সম্প্রতি ট্রাফিক নিয়ম ভাঙার জেরে ওই শিক্ষককে জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছিল। অনুমান, সেই ঘটনার জেরেই এদিন তাঁর উপর হামলা চালানো হয়েছিল। যদিও ওই জরিমানার ঘটনার সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার কৃষ্ণগোপালের কোনও যোগাযোগ নেই বলেই জানা গিয়েছে।
সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরের ঘটনায় আটক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁর সহকর্মীরাও যথেষ্টই ক্ষুব্ধ। অভিযোগ, ওই শিক্ষক স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্মেও নানা সময় বাধা দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে স্কুলে ফাঁকিবাজির অভিযোগ রয়েছে। ঘটনায় তিতিবিরক্ত স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ইতিমধ্যে বিষয়টি স্কুলের পরিচালন সমিতির নজরেও এনেছেন। তবে এখানেই শেষ নয়, প্রয়োজনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছেও অভিযোগ জানানোর চিন্তাভাবনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আক্রান্ত সিভিক ভলান্টিয়ার কৃষ্ণগোপাল বলেন, প্রতিদিনের মতো এদিনও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। সেই সময়ে ওই শিক্ষক এসে আমার নাম জানতে চান। তারপরই গালিগালাজ শুরু করেন। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে একাধিকবার ধাক্কা মারেন। মারধর শুরু করেন। ক’দিন আগেই কোথাও একটি ফাইনের ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনার জেরেই মারধর করেছে বলেই মনে হচ্ছে।প্রকাশ্যে রাস্তায় কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরের ঘটনার নিন্দা করেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অভিজিৎ নন্দন। তিনি বলেন, এটা শিক্ষকসুলভ আচরণ নয়। অনভিপ্রেত ঘটনা। নিজস্ব চিত্র