• এন্টালিতে লুটের পর পানশালায় পার্টি দিয়েছিলেন অভিযুক্ত কনস্টেবল মিন্টু
    বর্তমান | ১৭ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এন্টালিতে ২.৬৬ কোটি টাকা লুটের খুশিতে ওই দিনই ধর্মতলা লাগোয়া একটি পানশালায় পার্টি দিয়েছিলেন অভিযুক্ত কনস্টেবল মিন্টু সরকার। সেখানে বিপুল টাকা খরচ করেন। পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন পুলিস অফিসারও। তদন্তে নেমে এই তথ্য হাতে এসেছে লালবাজারের। হেফাজতে থাকা ওই পুলিসকর্মী বিষয়টি অস্বীকার করেননি। একইসঙ্গে তাঁর সঙ্গে একাধিক হাওলা কারবারির মেসেজ আদানপ্রদানের নথি পাওয়া গিয়েছে।

    ডাকাতির ঘটনার তদন্তে নেমে আধিকারিকরা বুঝতে পারছেন, পরিকল্পনা করে নিখুঁত অপারেশন চালিয়েছেন মিন্টু। গোটা কাজটি যখন হচ্ছে তখন তিনি অফিসেই ছিলেন। টাকা লুটের পর তাঁকে ফোন করে সোর্স শাহনওয়াজ শেখ ওরফে রাজু। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তের নির্দেশমতো টাকা কামারডাঙা এলাকায় একটি বাড়িতে আসে। সেখানে  ভাগ-বাটোয়ারা হয়। অপারেশনে থাকা এক দুষ্কৃতী মিন্টুকে তার ডেরায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে আসে। এরপর অভিযুক্ত কনস্টেবল তাঁর  ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও পরিচিত পুলিস অফিসারদের ফোন করে জানান, একটা ভালো কাজ হয়েছে। তারজন্য পার্টি দেবেন। সকলকে তিনি ধর্মতলা এলাকায় একটি পানশালার সামনে আসতে বলেন। সন্ধ্যায় সকলে হাজির হলে তাঁদের নিয়ে ওই পানশালায় ঢোকেন। ব্যাপক খানাপিনা ও মদ্যপান চলে।  পুরো বিল নগদে মেটান মিন্টু। তদন্তকারীরা জেনেছেন, ডাকাতির টাকাই  তিনি এখানে নিয়ে এসেছিলেন। সেই টাকা খরচ করা হয়েছে। এই নিয়ে মিন্টুকে জেরা করা হলে জানিয়েছেন, ওই দিন পার্টি দিয়েছিলেন। ডাকাতিতে অভিযুক্ত একজন পুলিসকর্মী যেভাবে ঠান্ডা মাথায় পার্টি দিচ্ছেন তা দেখে অবাক তদন্তকারীরা। ধৃত জেরায় জানিয়েছেন, পুলিস কর্মী হওয়ায় তিনি জানতেন তাঁর মোবাইল নজরে থাকবে। সেই কারণে পরিবারের সদস্যদের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ঘটনার পর ডাকাতিতে অভিযুক্তদের পালানোর কথা বলছিলেন। পাশাপাশি ডাকাতির তদন্ত টিম কোথায় তল্লাশিতে যাচ্ছে, কাদের খুঁজছে তাই নিয়ে খোঁজখবর রাখছিলেন। এমনকী  বেশ কয়েকজন পুলিসকর্মীর মোবাইল ট্র্যাক করে জেনে যান টিম বাইরে গিয়েছে। এরপরই অভিযুক্তদের অন্য মোবাইল থেকে ফোন করে বলেন, সেখান থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে। 

    কিন্তু একজন কনস্টেবল কীভাবে ফোন ট্র্যাক করার সফ্টওয়ার নিজের মোবাইলে রাখলেন তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গোয়েন্দারা জেনেছেন, বিভিন্ন হাওলা কারবারির নম্বর জোগাড় করে তাঁদের মিথ্যা মামলার ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা তুলতেন। এমনকী বেআইনি কল সেন্টার কারা চালাচ্ছে তা নিয়েও তিনি খোঁজখবর করতেন। সেখানকার নগদ কোথায় এবং কীভাবে যাচ্ছে জেনে নিয়ে শীর্ষ কর্তাদের অনুমতি ছাড়াই তল্লাশি চালিয়ে টাকা লুট করেছেন বলে অভিযোগ।  
  • Link to this news (বর্তমান)