নির্দেশ অমান্য, পুর ইঞ্জিনিয়ারকে সশরীরে হাজিরার হুকুম হাইকোর্টের
বর্তমান | ১৭ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রায় দু’বছর হতে চললেও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হয়নি। তাই এবার কলকাতা পুরসভার ৮ নম্বর বরোর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, পুর-আধিকারিকদের টালবাহানার জন্য রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
ঘটনা হল, বালিগঞ্জ থানা এলাকায়, কলকাতা পুরসভার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎ বোস রোডে একটি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, শরৎ বোস রোডে ২২ নম্বর প্রমিসেসে বসবাসের জন্য নির্মাণের অনুমতি থাকলেও আপাতত তা বাণিজ্যিক নির্মাণে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ওই নির্মাণের গ্রাউন্ড ফ্লোরটি কার পার্কিং এরিয়া হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু সেটিকে দোকানঘর হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তল পর্যন্ত বসবাসের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হলেও বর্তমানে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তল অফিসঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই সঙ্গে অনুমোদন ছাড়া আরও নির্মাণ হচ্ছে। ২০২৩ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী। মামলা চলাকালীন পুরসভার তরফে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই নির্মাণকারীকে ৪০১ ধারায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি সিনহার নির্দেশ ছিল, পুরসভা ইতিমধ্যে যেহেতু বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করে নোটিস পাঠিয়েছে, তাই ১২ সপ্তাহের মধ্যে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, নির্দেশের পর বহুদিন কেটে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুরসভা। তাই আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়।
সেই মামলায় এবার পুরসভার তরফে জানানো হয়, বসবাসের জন্য নির্মিত ওই নির্মাণটি ব্যবসায়িক নির্মাণে রূপান্তরের অনুমতি দিয়েছেন পুরসভার স্পেশাল অফিসার। এজন্য নির্মাণকারী প্রয়োজনীয় অর্থ বা জরিমানা জমা দিয়েছেন। স্পেশাল অফিসারের ওই সিদ্ধান্ত মেয়র পরিষদের কাছে পাঠানো হয়েছে অনুমোদনের জন্য। এরপরই বিচারপতি সিনহা মেয়র পরিষদের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশও কার্যকর করেনি পুরসভা। যে কারণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিচারপতি আপাতত ৮ নম্বর বরোর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ বড়ালকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে নির্দেশ কার্যকর না করার কারণ জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ১২ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি।