• ল্যাপটপ চেয়ে কেন বারবার ফোন লিভ ইন সঙ্গিনীর? দিলীপ পত্নী রিঙ্কুপুত্রের মৃত্যুতে রহস্যের জট
    প্রতিদিন | ১৭ মে ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: তখন পেরিয়ে গিয়েছে মধ্যরাত। সম্পর্কে আগেই ঘটেছে অবনতি। তবু অত রাতে রিঙ্কুপুত্রর ফ্ল্যাটে কেন হাজির হলেন তাঁর লিভ ইন পার্টনার তথা সহকর্মী ও বান্ধবী? এই প্রশ্ন তুলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রিঙ্কু মজুমদারের ঘনিষ্ঠরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশও। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, বন্ধু প্রীতমের মৃত্যুর পর ফ্ল্যাট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁর বান্ধবী ফের ঢোকার চেষ্টা করলেন ফ্ল্যাটে? সদ্য সন্তান হারানো মা রিঙ্কুকে সান্ত্বনা দেওয়ার বদলে বারবার ফোন করে কেনই বা ফ্ল্যাটে ফেলে যাওয়া ল্যাপটপ চেয়ে জোর করলেন ওই যুবতী?

    গত মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনে অভিজাত আবাসন সাপুরজির ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বঙ্গ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের ছেলে সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত ওরফে প্রীতমের দেহ। রিঙ্কু প্রীতমের বান্ধবীর কাছ থেকে সেই খবর পেয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ওই বান্ধবী তথা লিভ ইন পার্টনার যুবতীকে পাশে প্রীতমের শবশকটের কাছে রিঙ্কুর পাশে দেখা যায়। রিঙ্কুদের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই যুবতীকে বলা হয় প্রীতমকে বিয়ে করতে। কিন্তু এখনই বিয়ে করতে তিনি রাজি নন বলে জানিয়ে দেন যুবতী। অভিযোগ, যুবতী রিঙ্কুকে মেসেজ করে জানান যে, প্রীতম তাঁর কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়েছেন। ওই টাকা ফেরত দেন রিঙ্কু। এর পর থেকে প্রীতম ও যুবতীর মধ্য সম্পর্কের অবনতি হয়। রিঙ্কু ও প্রীতম যুবতীকে ফ্ল্যাটে আসতে বারণ করেন।

    সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে, কী এমন হল যে, গভীর রাতে প্রীতমের ফ্ল্যাটে যুবতীকে আসতে হল, আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন প্রীতম? সেই ক্ষেত্রে প্রীতমের সঙ্গে যুবতীর কি এমন কোনও কথা হয়, তা নিতে পারেননি প্রীতম? যুবতীর কথায় প্রীতম কি অবসাদে চলে যান, যে কারণে তিনি রাতে অতিরিক্ত মদ্যপান করে ফেলেছিলেন বা ওষুধের ওভারডোজ করেছিলেন? পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সেই উত্তর জানতে শুধু ওই যুবতীকে নয়, জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন প্রীতমদের আরও দুই বন্ধুকে, যাঁরা গত সোমবার রাতে ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন রাত তিনটের সময় আসেন। এর পর সারা রাত ধরে চলে তাঁদের পার্টি। রিঙ্কু মজুমদারের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রীতমের শেষকৃত্যের পর তাঁর ওই বান্ধবী, যাঁর সঙ্গে রিঙ্কুর ছেলের দু’বছরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, তাঁর আচরণই সন্দেহজনক বলে মনে হয় প্রত্যেকের। পরিবারের লোকেরা যখন নিমতলা শ্মশান থেকে প্রীতমের শেষকৃত্য সেরে বাড়ি ফেরেন, তারপর থেকেই রিঙ্কর মোবাইলে ফোন করতে থাকেন ওই যুবতী।

    তিনি বলেন, তাঁর ল্যাপটপ ফ্ল্যাটে পড়ে রয়েছে। তিনি সেটি ফেরত চান। রিঙ্কুদের পরিবারের পক্ষ থেকে যুবতীকে জানানো হয়, ওই ফ্ল্যাটে এখন তালা দেওয়া রয়েছে। তার চাবি রয়েছে তাঁদের এক পরিচিতর কাছে। কিন্তু তাঁদের পক্ষে ওই ফ্ল্যাট খোলা এখন সম্ভব নয়। পুলিশ সেই ফ্ল্যাট খুলে তদন্ত করতে পারে। এর কিছুক্ষণ পর নিউটাউন থানার আইসি-র নাম করে তিনি ফ্ল্যাটটি খুলে ল্যাপটপ দিতে বলেন। যেহেতু পুলিশ রিঙ্কুদের এই ব্যাপারে কিছু জানায়নি, তাই তাঁরা ফ্ল্যাট খুলতে রাজি হননি। এরপর প্রশ্ন উঠেছে, ওই যুবতীর আসল উদ্দেশ্য কী ছিল? শুধুমাত্র ল্যাপটপটি জোগাড় করা, না কি রাতে ফ্ল্যাটে ঢুকে কোনও তথ্য ও প্রমাণ লোপাট করা? এরপরও ওই যুবতী গভীর রাতে সাপুরজি আবাসনে গিয়েছিলেন বলে পরিবার ও পুলিশ খবর পেয়েছে। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)