আগেও বহু শৃঙ্গ জয় করেছেন। কিন্তু এভারেস্টের পা রাখার নেশা আলাদা। বৃহস্পতিবার মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পা পড়ল বর্ধমান শহরের বাসিন্দা সৌমেন সরকারের।
শহরের রানিসায়র পূর্ব পাড়ের বাসিন্দা, বছর চুয়ান্নর সৌমেন পূর্ত দফতরের (সড়ক) জাতীয় সড়ক সাব ডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার পদে কর্মরত। প্রায় ২০ বছর ধরে পর্বতারোহনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। দেশ-বিদেশের বহু পাহাড়ে গিয়েছেন, জিতেছেন। ২০২৪ সালে ৬০০১ মিটারের মাউন্ট দেও তিব্বা, ২০২৩ সালে রাশিয়ার মাউন্ট একব্রুশ, ২০২২ সালে মাউন্ট ইউনুম জয় করেছেন। তার আগে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে মাউন্ট নুন এবং মাউন্ট স্টক কাংরি জয় করেন পর পর। দেশের আওর অনেক ছোট পর্বতশৃঙ্গ অভিযানের কাহিনি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। যোগ দিয়েছেন একাধিক ম্যারাথনেও। বর্ধমান এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড নেচার ড্রাইভ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জয়রঞ্জন সেন বলেন, ‘‘যে সব ছেলেমেয়েরা এখন পর্বতারোহন করবে বলে মনস্থির করছে বা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, সৌমেনবাবু তাদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত।’’
১ এপ্রিল বর্ধমান থেকে মাউন্ট এভারেস্ট এবং মাউন্ট লোৎসে জয়ের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। ৩০ এপ্রিল পৌঁছন এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। তখন জানিয়েছিলেন, এভারেস্ট ক্যাম্প-৩ অবদি প্রথম ‘রোটেশন’ হয়ে গিয়েছিল প্রায় ১০ দিন আগে। ৫ মে থেকে ১২মে-এর মধ্যে সামিটের একটি সুযোগ আসতে চলেছে বলেও জানান। উত্তরাখণ্ডের নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং (এনআইএম) থেকে প্রাথমিক পর্বত আরোহনের কোর্স করেন তিনি। সেখানে ৯৯ জনের মধ্যে সেরার সম্মান পেয়েছিলেন। ভারতের প্রথম মহিলা এভারেস্ট জয়ী বাচেন্দ্রী পালের সঙ্গেও দেখা করেন সৌমেন। যাওয়ার আগে সৌমেন বলেন, ‘‘দেশের পতাকাকে এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছে দিয়ে যুব সমাজকে লক্ষ্য স্থির রাখার পরামর্শ দিতে চাই।’’
এ দিন পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দফতরের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সামলে উনি যেভাবে নিয়মিত পর্বত অভিযান করেন, সেটা বিশেষ প্রশংসার। এই সাফল্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।’’ দফতরের প্রাক্তন কর্তা কনককুমার সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ওকে চিনি। ভীষণ জেদি একটি ছেলে। ও যেটা করবে মনে করে, সেটা করেই ছাড়ে। এভারেস্ট জয় সেটারই দৃষ্টান্ত।’’