• শিক্ষকদের পিঠে লাঠির বাড়ি, স্কুল পড়ুয়ারা দল বেঁধে আজ বিকাশ ভবনের পথে
    এই সময় | ১৭ মে ২০২৫
  • চাকরি ফেরত চেয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শনিবার তৃতীয় দিনে পড়ল। বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষকদের বিকাশ ভবনের গেট ভাঙার ছবি দেখা গিয়েছে, দেখা গিয়েছে শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ছবিও। শুক্রবারও বিকাশ ভবনের সামনে দিনভর মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছেন চাকরিহারারা। তাঁদের সাফ দাবি, নতুন করে পরীক্ষায় তাঁরা বসবেন না। যোগ্য-অযোগ্যদের পৃথক করুক সরকার, চাকরি ফেরাক যোগ্যদের। ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর তরফে জানানো হয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল করে শিক্ষকদের অবস্থান মঞ্চে আসবে।

    বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিকাশ ভবনের সামনে টানা অবস্থানে চাকরিহারারা। একেবারে যুদ্ধং দেহি মেজাজে তাঁরা। এ দিন সকালে এক ব্যক্তি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো সেজে বিকাশ ভবনের সামনে হাজির হন। সঙ্গে ছিল পশ্চিমবঙ্গ INTUC সেবাদল লেখা প্ল্যাকার্ড। ওই ব্যক্তি জানান, চাকরিহারাদের সংহতি জানাতে এসেছেন।

    বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তাপ বাড়ছিল বিকাশ ভবনের সামনে। দুপুরে বিকাশ ভবনের গেট ভাঙা, পরে তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তের সেখানে পৌঁছনো নিয়ে উত্তেজনা, সব্যসাচীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ, এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগ ঘিরে ক্রমেই উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে।

    রাত হতেই তুলকালাম বাধে বিকাশ ভবনের সামনে। অভিযোগ, রাতে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। আহত হন একাধিক, রক্তও ঝরে। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বিনা প্ররোচনায় লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে। টেনে হিঁচড়ে তাঁদের সরানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ।

    এই ঘটনার পর শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন, রাজ্য পুলিশের ADG (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার, পুলিশ কর্তা জাভেদ শামিম। সুপ্রতিম সরকার দাবি করেন, ‘পুলিশ সংযত ছিল, অনুরোধ করলেও শোনেননি আন্দোলনকারীরা। ভিতরে অনেক নিরাপরাধ, অসুস্থ আটকে পড়েন। ৫০০-৭০০ মানুষকে উদ্ধার করতে সামান্য বলপ্রয়োগ করতে হয়। তবে আন্দোলনকারীদের সরাতে যতটুকু বলপ্রয়োগ না করলেই নয়, সেটাই করা হয়েছিল। এ কথা মানতে কোনও দ্বিধা নেই।’ ‘মিনিমাম বলপ্রয়োগ’-র কথা বলেন জাভেদ শামিমও। এই ঘেরাওয়ে এক অন্তঃসত্ত্বার আটকে পড়ারও অভিযোগ ওঠে। পাল্টা চাকরিহারারা দাবি করেন, পুলিশ গেট আটকে দিয়েছিল।

    পাল্টা ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-র অন্যতম মুখ চন্দন মণ্ডল দাবি করেন, তাঁদের তরফে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে নিরাপদে বের করে আনার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছিল। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে তা বরদাস্ত করা হবে না। একই সঙ্গে চাকরিহারারা বুঝিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়বে। তাঁদের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী এসে সরকারের অবস্থান আগে স্পষ্ট করুক। তার পর অবস্থান-বিক্ষোভ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

  • Link to this news (এই সময়)