• নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ, শিক্ষককে জুতোর মালা
    এই সময় | ১৭ মে ২০২৫
  • এই সময়, হেমতাবাদ: নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে মারধর করে থানায় নিয়ে আসেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে হেমতাবাদ থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

    পাশাপাশি ওই শিক্ষকের পরিবারের পক্ষ থেকেও কয়েজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে হেমতাবাদ থানার পুলিশ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অমল বর্মনকে (৬২) গ্রেপ্তার করে শুক্রবার রায়গঞ্জ জেলা আদালতে পাঠায়। তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

    পাশাপাশি অভিযুক্তকে মারধরের ঘটনায় বাদল পাসমান (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেও এ দিন রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হয়। তাঁর জামিন অবশ্য মঞ্জুর হয়।

    এক নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে মারধর করে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানোর এক ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় (সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি এই সময়)। যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় ঘটনার বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। মেলেনি অভিযুক্তের বক্তব্য।

    এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দিবাকর সাহা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার হঠাৎ দেখি এক ব্যক্তিকে জুতোর মালা পরিয়ে মারধর করতে করতে থানায় নিয়ে যাচ্ছে কিছু যুবক। পরে জানতে পারি উনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এক নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই ধরনের ঘটনা হেমতাবাদে দেখা যায়নি।’

    এই ঘটনায় লেগে গিয়েছে রাজনৈতিক রং। দু’টি ঘটনাতেই বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। দু’টি ঘটনার নিন্দা করে অভিযুক্ত শিক্ষক ও যারা জুতোর মালা পরিয়ে মারধর করেছে, তারা প্রত্যেকেই বিজেপির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

    এ বিষয়ে হেমতাবাদের তৃণমূল ব্লক সভাপতি আশরাফুল আলি বলেন, ‘এইরকম ঘটনা হেমতাবাদে প্রথম। একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, ভাবা যায় না। অভিযুক্ত আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত।’ তাঁর দাবি, ২০০৬ সালে যখন হেমতাবাদ বিধানসভা ছিল না, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা ছিল, তখন ওই শিক্ষক বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন।’

    পাশাপাশি তিনি জানান, যারা ধরে নিয়ে এসেছে, তাদের বেশিরভাগই বিজেপির সদস্য। দু’টি ঘটনাই নিন্দনীয়। পুলিশ তদন্ত করে সঠিক বিচার করবে।

    যদিও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অভিযুক্তদের সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে গেরুয়া নেতৃত্ব। এ বিষয়ে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বিপ্লব সরকার বলেন, ‘অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও তাকে মারধরের ঘটনায় জড়িত কেউই বিজেপি কর্মী নয়। বিজেপির সঙ্গে কারও কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’ এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানতে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

  • Link to this news (এই সময়)