• দামি শাড়ি চুরি করে সেলফি! ঝলক আপডেটের নেশাই ধরিয়ে দিল কলকাতার কন্যাকে...
    ২৪ ঘন্টা | ১৭ মে ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কোনওদিন ভেবেছেন শাড়ি চুরি করে পড়ে কেউ ফেসবুকে পোস্ট করতে পারে বলে! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে এই ঘোর কলিযুগে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষ এতটাই নিজেকে সকলের সামনে মেলে ধরতে ব্যস্ত যে, তাঁরা কখন কী করবেন আর কী করবেন না তা তাঁরা নিজেরাই ভেবেই পান না। 

    এক মহিলা অনেক দামি একটা শাড়ি প্রথমে চুরি করে পরে তিনি আবার সে সেই শাড়ি পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা পোস্টও করেন। এমন চুরির কথা আগে কোনওদিন ভাবতেই পারেননি! শুনতে বিস্ময়কর লাগলেও এমনই এক অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে মধ্যমগ্রামে।

    ঘটনাটা ঠিক কীরকম, তা জানতে চোখ রাখতে হবে এই প্রতিবেদনটিতে। যেরকম আমরা শাড়ি, জামা-কাপড় আলমারিতে ধাপে ধাপে রাখি তেমনই মধ্যমগ্রামের এক মহিলা ধাপে ধাপে তাঁদের সমস্ত শাড়ি, গয়না রাখেন আলমারিতে। যা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এরপরেই এই ঘটনাটায় আসে এক টুইস্ট। 

    পরিবারের লোকজন দেখেন ধাপে ধাপে রাখা শাড়িগুলো কেমন যেন কমে যাচ্ছে। কে কখন কীভাবে চুরি করছেন তা তাঁরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেন না। এই ঘটনায় রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েন মধ্যমগ্রামের এলআইসি টাউনশিপের বাসিন্দা আশিস দাশগুপ্ত এবং তাঁর পরিবার। এই নিয়ে তাঁরা মধ্যমগ্রাম থানাতে অভিযোগও দায়ের করেন। 

    অভিযোগ জানানোর পরেও এই ঘটনার কোনও কুলকিনারা করা যায়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্র ধরে এবার হাতেনাতে পাকড়াও করা হল আসল অপরাধীকে। চুরি করার কিছুদিন পরেই অপরাধী নিজেই হাঁটে হাঁড়ি ভাঙে। সে ভুল করে সেই দামি শাড়ি পড়ে হায়াটসঅ্যাপ স্টোরিতে পোস্ট শেয়ার করেন। ব্যাস তাঁর এই পোস্টই কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁর নিজের জীবনেই। 

    মহিলা ওই দাশগুপ্ত পরিবারে পরিচারিকার চাকরি করেন। তখনই তিনি সকলের অলক্ষ্যে গিয়ে ওই শাড়ি চুরি করেন এবং সেই শাড়ি পরেই সেশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন। আর সেই পোস্ট দেখা মাত্রই দাশগুপ্ত পরিবার সেই পোস্ট স্ক্রিনশট নিয়ে তাঁরা মধ্যমগ্রাম থানায় দৌঁড়ান। 

    আর এই মোক্ষম তথ্য পেয়েই তাঁরা পরিচারিকাকে গ্রেফতার করতে ছোটেন এবমং হাতে-নাতে তাঁকে গ্রেফতারও করেন। ওই পরিচারিকা শুধু একটাই চুরি করে ক্ষান্ত থাকেননি। গত চার মাসে একটা সাইবার প্রতারণা-সহ মোট ৬টা চুরির কিনারা করে ফেলে পুলিস। এই ঘটনায় রীতিমতো হতবাক সকলেই। এ যেন কেঁচো খুড়তে কেউটে উদ্ধার হল। 

    চুরির কিনারা করতে গিয়ে পুলিস ওই পরিচারিকার কাছ থেকে উদ্ধার করেন গয়না, বাইক, স্কুটি-সহ সাইবার প্রতারণায় খোয়া যাওয়া প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৯৬৪ টাকা। সেই সব উদ্ধার করে তাঁরা আসল মালিকানাদের ফারতও দেন। চুরি যাওয়া সামগ্রী পেয়ে তাঁরা রীতিমতো খুশি। 

    মধ্যমগ্রাম চৌমাথা এলাকায় বাসিন্দা এবং বাংলার অধ্যাপিকা পুষ্প বৈরাগ্যর বাড়ির পরিচারিকা ছিল সে। সেই পরিচারিকাকে তিনি অত্যন্ত বিশ্বাস করতেন এবং ভরসাও করতেন। সেই বিশ্বস্ত পরিচারিকাই কিনা এত বড় চুরি করেছেন। সে তাঁদের আলমারি থেকে প্রায় ৮০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না চুরি করে। 

    যদিও বিষয়টা কিছুটা আন্দাজ করেই পরিচারিকার বিরুদ্ধে থানায় অভিয়োগ দায়ের করেন পুষ্পদেবী। এরপর পুলিস তদন্ত চালিয়ে ৮০ গ্রাম সোনার মধ্যে ৩৮ গ্রাম সোনা উদ্ধার করেছে। 

    এই প্রসঙ্গে পুলিস সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, 'মধ্যমগ্রাম থানার পুলিস খুবই তত্‍পরতার সঙ্গে চুরির কিনারা করছেন। এই ঘটনায় ৫জনকে গ্রেফতার করাও হয়েছে।'

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)