• ফোন হ্যাকিংয়ের সমাধানের নাম করে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, ‘ভুয়ো পুলিশ’কে যাবজ্জীবন সাজা
    প্রতিদিন | ১৭ মে ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: ফোন হ্যাক হয়ে গিয়েছিল কলেজছাত্রীর। নকল পুলিশের পরিচয় দিয়ে সেই সমস্যা সমাধানের টোপ দিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের অপরাধে যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বারাসত আদালত। বছর তিনেক আগেকার ঘটনায় শনিবার বাহার আলি নামে ওই যুবককে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৭৬ ও ৪১৯ ধারায় এই সাজা শোনালেন বিচারক। এক লক্ষ টাকা জরিমানাও হয়েছে তাঁর। তাতে স্বস্তিতে কলেজছাত্রী ও তাঁর পরিবার।

    ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালের মে মাসে। এক কলেজছাত্রীর ফোন হ্যাক হয়ে গিয়েছিল, তা নিয়ে তাঁর বাবা মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেখান থেকে ছাত্রীকে হ্যাকড হওয়া ফোন পুনরুদ্ধার করতে জনৈক ‘বিক্রমবাবু’র কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে তার আগেই অভিযুক্ত নিজেকে বিক্রম বলে পরিচয় দিয়ে ফোন করেন ছাত্রীর বাবাকে। থানার অদূরে কীর্তিপুর পঞ্চায়েতে দেখা করতে বলেন ছাত্রী ও তাঁর বাবাকে। সেইমতো কৃষ্ণমাটি এলাকায় ফোন নিয়ে পৌঁছয় ছাত্রী। এরপর ‘বিক্রম’ ফোনটি নিয়ে ছাত্রীর বাবাকে অন্য কাজে পাঠিয়ে দেন। ফোনের চ্যাট ডিলিট করার ভয় দেখিয়ে ছাত্রীকে নগ্ন হতে বাধ্য করেন। এরপর ধর্ষণ করা হয় তাকে।

    এখানেই তার কুকীর্তি শেষ হয়নি। ধর্ষণ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালে সেই ভিডিও ভাইরাল করার হুমকিও দেওয়া হয় ছাত্রীকে। প্রথমে ছাত্রী ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। কিন্তু পরে ফের অশ্লীল ভিডিও পাঠিয়ে ওই ছাত্রীকে ডেকে পাঠায় ‘বিক্রম’ নামে ওই যুবক। তখনই বিপদ বুঝে ছাত্রী মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ জানান। ঘটনার তদন্তে নেমে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানা যায়, তার আসল নাম বাহার আলি। শুধু এই ছাত্রীকেই ধর্ষণের অভিযোগ নয়, এভাবেই হ্যাক হওয়া ফোন ঠিক করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের ডেকে ধর্ষণ করত সে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং পুলিশের ভুয়ো পরিচয়ের অভিযোগে মামলা শুরু হয়। তিন বছর পর দোষী সাব্যস্ত করে বাহার আলিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বারাসত আদালতের বিচারক।
  • Link to this news (প্রতিদিন)