বাংলায় এই প্রথম, জেলা হাসপাতালে ২ টাকায় লেজার সার্জারি
প্রতিদিন | ১৭ মে ২০২৫
অভিরূপ দাস: বেসরকারি হাসপাতালে যে অস্ত্রোপচারের খরচ ৭০ হাজার টাকা, সরকারিতে তাই হবে মাত্র ২ টাকায়। তাও আবার জেলাস্তরের হাসপাতালে! বিশ্বাস না হলে আবার পড়ুন!
এই প্রথম, বাংলার জেলা হাসপাতালে শুরু লেজার সার্জারি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তারই প্রাথমিক ধাপ হিসাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এম আর বাঙুর হাসপাতালে বসল দশ লাখি ডায়োড লেজার মেশিন। এম আর বাঙুর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগের আধিকারিক ডা. মাখনলাল সাহা জানিয়েছেন, পূর্ব ভারতে সরকারি স্তরে প্রথম কোনও জেলা হাসপাতালে লেজার মেশিন দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষ এতদিন লেজার সার্জারির কথা ভাবতেও পারতেন না। তাদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠবে ডায়োড লেজার মেশিন। শুক্রবার ডায়োড লেজার মেশিন। এম আর বাঙুর হাসপাতালে।
উদ্বোধনের পরেই ডা. মাখনলাল সাহার নেতৃত্বে তিনজনের ফিসচুলা লেজার সার্জারি হয়েছে বাঙুরে। খুশি রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। জানালেন, “সরকারি হাসপাতালে পরিষেবার উন্নয়নে আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি।” ভবিষ্যতে অন্য জেলা হাসপাতালেও এই মেশিন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে নবান্নের। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
পায়ুপথের অসুখ এই ফিসচুলা। যেখানে পায়ুপথের ভিতর থেকে বাইরের ত্বকে একটি অস্বাভাবিক চ্যানেল বা রাস্তা তৈরি হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লেজারের মাধ্যমে এই সার্জারি হলে কাটাছেঁড়া রক্তক্ষরণ ছাড়াই অস্ত্রোপচার হবে। রোগী দ্রুত কাজে ফিরতে পারেন। ডা. মাখনলাল সাহা জানিয়েছেন, যাঁদের প্রথম লেজার সার্জারি হল, তার মধ্যে দুই তরুণী ও একজন যুবকের এদিন অস্ত্রোপচার হয়েছে।
এদিনের ওটিতে নার্সিং টিমের দায়িত্বে ছিলেন সিস্টার মন্দিরা দাসগুপ্ত, অ্যানাস্থেটিস্টের দায়িত্ব সামলেছেন ডা. বি এন দাস। নয়া উদ্যোগে শুধুমাত্র রোগীরা উপকৃত হবেন না, হাসপাতালের স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষার্থীদের লেজার প্রক্টোলজি সার্জারির প্রাথমিক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ হবে। বাঙুরের শল্য চিকিৎসা বিভাগ ধন্যবাদ জানিয়েছে হাসপাতালের সুপার ডা. শিশির নস্করকে। শিশিরবাবু জানিয়েছেন, “মাসছয়েক আগে আমাদের হাসপাতালে লেজার সার্জারি প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। সেসময় সার্জনরা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।” হাসপাতালে সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. জয়দীপ রায় জানিয়েছেন, প্রতি বুধবার ও শনিবার বাঙুরে সার্জিকাল ওপিডিতে ডাক্তার দেখিয়ে এই অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হওয়া যাবে।