ধীমান রায়, কাটোয়া: ভারত-পাক সংঘাত আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কন্ঠস্বর নকল করে ফেক ভিডিও পোস্ট। তাতে লেখা, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণের সময় প্রকাশ্যে পাকিস্তানের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন।” সেইসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদির ফেক ভিডিওর নিচে ছিল পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ছবি। নিচে হাসির প্রতিক্রিয়া। ফেসবুকে এহেন ‘দেশবিরোধী’ পোস্ট করে আটক এক রেলকর্মী। ধৃত বছর পঞ্চাশের ইমারুল শেখ ওরফে স্বপন শেখ। গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ স্বপন শেখকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, রেলের গ্রুপ ডি কর্মী স্বপনের বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের পিচকুড়ি গ্রামে। তিনি ফেসবুকে ওই ফেক ভিডিও পোস্ট করার পরই কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী ফোন করে পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। তা শুনে তিনি পোস্ট মুছেও দেন। কিন্তু ততক্ষণে তার স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল সেই ভিডিও ঘিরে তোলপাড় নেটপাড়া। দেশবিরোধী সেই পোস্টের খবর পেয়ে গুসকরা থানার পুলিশ প্রথমে তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। অভিযোগ, স্বপন বিভিন্নভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করছিলেন। এরপরই তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত প্রত্যাঘাত হানে পাকিস্তানের উপর। অপারেশন সিঁদুরের ধাক্কায় জেরবার পাকিস্তান। যদিও পরবর্তী সময়ে দুই দেশের মধ্যে আলাপ আলোচনার পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় রোজই সোশাল মিডিয়ায় দেশবিরোধী পোস্টের অভিযোগ উঠছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে ওই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া, গুসকরা, কালনা থানা এলাকা থেকে কয়েকজনকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই তালিকায় যোগ হলেন রেলকর্মী স্বপন শেখ। আগে তিনি সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে ঘুরতে দেখা যেত স্বপনকে। তাঁর দেশবিরোধী ফেসবুক পোস্ট দেখার পর স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ। অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে।