ট্যাংরার দে পরিবারের তিন সদস্য খুনের ঘটনায় আজ গ্রেফতার হলেন পরিবারের বড় ছেলে প্রণয় দে। আজ, শনিবার এনআরএস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর তাঁকে শিয়ালদা আদালতে পেশ করা হয়। সেখানেই বিচারক আগামী ৩০ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ট্যাংরায় দে পরিবারের দুই স্ত্রীর হাতের শিরা এবং গলা কেটে তার সঙ্গে কিশোরী মেয়ের শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ রয়েছে বড় ছেলে প্রণয় দে’র বিরুদ্ধে। প্রসূণ দে ইতিমধ্যেই জেলে বন্দি। নাবালক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন দুই ভাই প্রণয় ও প্রসূণ বলে অভিযোগ।
বিপুল টাকা বাজারে ঋণ হয়ে যাওয়ায় এভাবেই গোটা পরিবারকে শেষ করে ফেলবেন বলে পরিকল্পনা করেন দে ব্রাদার্স। বেঁচে যায় তিনজন—প্রণয় দে, প্রসূণ দে এবং কিশোর প্রতীপ দে। এই প্রতীপ দে এখন হোমে আছে। কেউ তার দায়িত্ব না নেওয়ায় হোমে থাকতে হচ্ছে। সেখানের একটি স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করার কথা রয়েছে প্রতীপের। দাদা প্রণয় দে সঙ্গী ছিলেন ভাই প্রসূণ দে। প্রসূণ দে’র ছেলে প্রতীপ। কাকা প্রণয়ের বুদ্ধিতে বাবা প্রসূণ দে সঙ্গ দেওয়ায় এখন গোটা পরিবারটাই শেষ। একা জীবনের লড়াই করছে ১৪ বছরের কিশোর প্রতীপ।
পথ দুর্ঘটনার পর থেকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনজন। প্রসূণ, প্রণয় এবং প্রতীপ। তারপর চিকিৎসায় সেরে উঠে প্রথমে প্রসূণ দে জেলে যায়। তারপর কিশোর প্রতীপ দে সুস্থ হয়ে হোমে যায় এবং অবশেষে প্রণয় দে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে শ্রীঘরে জায়গা পেলেন। এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনজনেই। প্রসূন আগেই গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। এখন প্রণয়ও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। এখন তাঁরও গোপন জবানবন্দি নিতেই পারে পুলিশ। বিলাসবহুল বাড়ি, দামি গাড়ি সবই এখন অতীত এই তিনজনের জীবনে।
প্রতীপকেও এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের জোরে সে বেঁচে যায়। ট্যাংরা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছিল গোটা শহর। দে পরিবারের পরিচিতরা সেদিন রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েছিলেন। পরিবারের এই আর্থিক অবস্থার জন্য মেক্সিকোর একটি এজেন্সিকেই প্রণয় ও প্রসূন দায়ী করেছিলেন। গতবছর ডিসেম্বর মাস থেকে তাঁদের ব্যবসা খারাপ হতে শুরু করে। চামড়া এবং অন্যান্য সরবরাহকারীদের বকেয়া টাকা মেটাতে পারছিলেন না তাঁরা। আর দিন দিন পরিস্থিতি আরও তলানির দিকেই যাচ্ছিল। তাই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়।