নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শহরপ্রান্তের চর্মনগরী কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স বানতলায় নৃশংস খুন। বানতলার নলবন-১’এ কাঁটাতলায় রাস্তার ধারে ফাঁকা জমি থেকে শনিবার দুপুরে উদ্ধার হল এক যুবকের গলাকাটা দেহ। অকুস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে জুতো, রুমাল ও মানিব্যাগ। যদিও ব্যাগ ফাঁকা। গায়েব মোবাইল ফোন। রহস্যজনক এই খুনের কিনারায় নেমেছে কেএলসি থানা ও লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। ঘটনার নেপথ্যে ত্রিকোণ প্রেম ও স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের ‘ইন্ধন’ থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান তদন্তকারীদের। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে ‘চিহ্নিত’ করা গিয়েছে। তাঁর খোঁজ চলছে।
পুলিস জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম রাজা মণ্ডল (৩৬)। স্থানীয় একটি রেস্তরাঁয় কাজ করতেন তিনি। এলাকায় বাবাই নামে পরিচিত। আনন্দপুর থানা এলাকার নোনাডাঙায় পুরনো বাড়ি। ছোটবেলায় বাবা-মা মারা যাওয়ার পর থেকে মামার কাছেই মানুষ। কয়েক বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। বাসন্তী হাইওয়ের কাছে মালঞ্চ এলাকায় রাজার শ্বশুরবাড়ি। বিয়ের পর থেকে মামার সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে সেখানেই থাকতে শুরু করেন রাজা। এক পুত্রসন্তান রয়েছে তাঁদের। কিন্তু বছরখানেক আগে দাম্পত্য জীবনে অশান্তি শুরু হয়। স্থানীয় এলাকা ও যুবকের কাজের জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে তাঁর স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে সন্দেহের তত্ত্ব পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের দাবি, তাঁর স্ত্রী অন্য কোনও সম্পর্কে জড়িয়েছে বলে সন্দেহ করছিলেন রাজা। এ নিয়ে তুমুল অশান্তি শুরু হয়। তার জেরেই মাসছয়েক ধরে আলাদা থাকতে শুরু করেন রাজার স্ত্রী। কাঁটাতলার যে হোটেলে কাজ করতেন রাজা, সেই হোটেল মালিক সত্যজিৎ মণ্ডল ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জেনেছে, গত চার মাস ধরে হোটেলেই থাকছিলেন যুবক। মাঝেমধ্যে শ্বশুরবাড়িতে গেলেও, রাতে থাকতেন না।
এদিন দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেএলসি থানার পুলিস। প্রাথমিকভাবে খুন বলে নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে তথ্যপ্রমাণ ও নমুনা সংগ্রহ করেন লালবাজারের সায়েন্টিফিক শাখা। লালবাজার জানিয়েছে, স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে কেএলসি থানা। পুলিসের অনুমান, স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তাহলে কি পরকীয়ার সন্দেহ সত্যি? কার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ানোর কারণে এই অশান্তি? যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিসের ডেপুটি কমিশনার (ইস্ট) অরীশ বিলাল জানিয়েছেন, ‘একজন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁর লোকেশন ট্র্যাক করছে পুলিস। তাঁকে ধরা গেলেই খুনের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’