উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য বিকল্প পথের রূপরেখা চূড়ান্ত, ভরকেন্দ্র কলকাতা
বর্তমান | ১৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দ্বৈরথ অব্যাহত। বর্তমানে তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বাংলাদেশ! এমনকী, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে ভারতের বাকি অংশের যোগাযোগ নিয়ে চীনের মাটি থেকে বিরূপ বার্তা দিয়েছে ঢাকা। তাই চুপ করে বসে নেই নয়াদিল্লি। দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী ‘চিকেন নেক’-এর পাশাপাশি একটি বিকল্প পথের রূপরেখা তৈরি করে দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিল ভারত। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই বিকল্প পথের সুচনা হবে কলকাতা থেকে।
সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে জলপথে যোগাযোগ স্থাপন হবে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সিট্টে বন্দর পর্যন্ত। সেখান থেকে কালাদান নদীপথ ব্যবহার করে পৌঁছনো যাবে মায়ানমারের পালেটায়। তারপর সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুই পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন হবে। অন্যদিকে, শিলং থেকে শিলচর জাতীয় সড়ক এবং পরবর্তী পর্যায়ে এই জাতীয় সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে জোরিনপুইয়ের সঙ্গে। ফলে জলপথে পালেটায় পৌঁছে সড়কপথে সরাসরি চলে যাওয়া যাবে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অংশে। জানা গিয়েছে, মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে অসমের বরাক উপত্যকার শিলচর পর্যন্ত (১৬৭ কিলোমিটার) চার লেনের জাতীয় সড়ক তৈরির দায়িত্ব বর্তাচ্ছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের উপর।
বেজিং থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস সম্প্রতি বলেছেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারত স্থলবেষ্টিত। ঢাকা এই অঞ্চলের সমুদ্রের এক মাত্র অভিভাবক।’ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের এই মনোভাবের প্রেক্ষিতে ভারতের তরফে বিকল্প পথের রূপরেখা চূড়ান্ত করার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। প্রসঙ্গত, দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগাযোগের একমাত্র পথ হল শিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেন নেক’। বাংলাদেশ এবং মায়ানমার হয়েও ভারতের এই অংশে পৌঁছনোর উপায় রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পরিবর্তিত অবস্থানের কারণে কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের (যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের সময়সীমা ধার্য হয়েছে) উপর ভর করে মায়ানমারের মাধ্যমে বিকল্প পথটি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয় দিল্লি। শিলং-শিলচর হাইওয়ের কাজ শেষ হলেই এই বিকল্প পথের স্বপ পূরণ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গত ৩০ এপ্রিল ২২,৮৬৪ কোটি টাকার ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’-কে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মায়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে এই প্রকল্প যাতে কোনওভাবে হোঁচট না খায়, তা নিয়েও সতর্ক রয়েছে কেন্দ্র। সেই কথা মাথায় রেখেই কাজ এগনো হচ্ছে।