বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যানকে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
বর্তমান | ১৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অন্তত দু’টি পৃথক মামলায় আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করায় এবার বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যানকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দু’টি মামলাতেই কেন নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি, উপস্থিত থেকে তার জবাব দিতে হবে চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাতোকে।
কোন দু’টি মামলার ক্ষেত্রে এমন নির্দেশ? প্রথম মামলায় মামলাকারী আশিস ভট্টাচার্যর অভিযোগ, তিনি বৈদ্যবাটি পুরসভার কর্মী ছিলেন। ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর অবসর গ্রহণ করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর অবসরকালীন সুবিধা বা পেনশন চালু করেনি পুরসভা। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মতো অন্য এক কর্মীর ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছিল। ওই কর্মী হাইকোর্টে মামলা করেন। হাইকোর্ট ওই কর্মীর পক্ষেই রায় দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পুরসভা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে ওই কর্মীর সমস্ত অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা পুরসভাকে চালু করার নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশনামা আদালতে পেশ করে আশিসবাবুও অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা চালুর দাবি করেন হাইকোর্টে। সবকিছু খতিয়ে দেখার পর ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলাকারীর সমস্ত নথি চার সপ্তাহের মধ্যে ডিরেক্টর অব পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যান্ড গ্রুপ ইনসিওরেন্সের (ডিওপিপিজি) কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া ছয় মাসের মধ্যে মামলাকারীর পেনশন চালু করারও নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা।
এই নির্দেশের পর এক বছর কেটে গেলেও তা কার্যকর করেনি পুরসভা। এমনকি ডিরেক্টর অব লোকাল বডি বা ডিওবি-র তরফে পুর চেয়ারম্যানকে মামলাকারীর সমস্ত নথি ডিওপিপিজি-র কাছে পাঠাতে বলা হলেও চেয়ারম্যান তা করেননি। এতে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। সম্প্রতি সেই মামলার শুনানির পর বিচারপতি সিনহা নির্দেশে জানিয়ে দেন, কেন এখনও নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি চেয়ারম্যানকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তার জবাব দিতে হবে।
অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলাতেও শঙ্কর রায়ে নামে এক পুরকর্মীকে অস্থায়ী নিয়োগ দিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু ওই কর্মীর দাবি ছিল, তাঁকে কমপ্যাশনেট অ্যাপয়েন্টমেন্ট হিসেবে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। বিচারপতি সিনহা তাঁর পক্ষে রায় দিলেও তা কার্যকর করেনি পুরসভা। এখানেও আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। সেই মামলাতেও চেয়ারম্যানকে সশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। দু’টি মামলার শুনানিই ১৯ জুন।