• প্রাইমারি টেট-এ সফলদের ‘বেকার মেলা’, চা-চপ-মুড়ি বিক্রি ভাবী শিক্ষকদের!
    এই সময় | ১৮ মে ২০২৫
  • এই সময়: কলেজ স্কোয়ারে ২০২২ সালের টেট–উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শনিবার নজর কাড়ল ‘বেকার মেলা’। সেখান চাকরিপ্রার্থীরা কেউ এ দিন চপ–মুড়ি নিয়ে বসেছিলেন, কেউ বিক্রি করছিলেন চা। কেউ ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন, তো কেউ আবার কাঠফাটা গরমে পানীয় জলের বোতল ও লস্যি।

    কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাথমিকের হবু শিক্ষকদের আন্দোলন শনিবার দ্বিতীয় দিনে পড়ল। এ দিন প্রতীকী বেকার মেলার আয়োজন করে তারা সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। প্রতীকী বেকার মেলায় মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে নিজেদের দাবির কথাও তুলে ধরেছেন ভাবী শিক্ষক–শিক্ষিকারা।

    তবে চাকরিপ্রার্থীরা দাবি জানালেও প্রথম দিনের মতো এ দিনও তাঁদের জন্য কলকাতা পুরসভা পানীয় জলের গাড়ি দেয়নি। তার জন্য তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এ ভাবে তাঁদের আন্দোলন থামানো যাবে না। যতদিন না প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে, ততদিন এই তীব্র গরমের মধ্যেও তাঁদের এই কর্মসূচি ধারাবাহিক ভাবে চলবে।

    তাতে স্কুলশিক্ষা দপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, কলকাতা পুরসভা এবং পুলিশ যতই অসহযোগিতা করুক, তাতে তাঁদের কিছু যায়–আসে না বলে হবু শিক্ষক–শিক্ষিকারা জানিয়েছেন।

    প্রাথমিকের অন্যতম চাকরিপ্রার্থী অদিতি কর্মকার এ দিন বলেন, ‘আমাদের হাতে চক–ডাস্টার এবং বই-খাতা থাকার কথা ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হাতে দিয়েছেন শুধুই ভাতা।’ প্রাথমিকে ৫০ হাজার শূন্যপদে অবিলম্বে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীরা অনড়। চাকরিপ্রার্থী পার্থজিৎ বণিক জানান, বিকাশ ভবনে প্রতীকী তালা ঝোলানোর পরেও স্কুলশিক্ষা দপ্তরের ঘুম ভাঙেনি।

    পর্ষদ সচিব প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, শিক্ষা দপ্তর সব ক’টি জেলার শূন্যপদ পাঠালেই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। কিন্তু শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া শূন্যপদের তালিকা পাঠানো সম্ভব নয়।

    তাই, মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ‘বেকার মেলা’র আয়োজন বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। চাকরিপ্রার্থী মহম্মদ মিজানুর‍ ইসলামের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী দেখেও দেখছেন না, শুনেও শুনছেন না। প্রাথমিকে নিয়োগের দাবিতে বছরের পর বছর আন্দোলন, ধর্না এবং মিছিল করে আমরা ডেপুটেশন দিচ্ছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ নিয়ে কোনও বার্তাই দিচ্ছেন না। আমরা আর কী ভাবে ওঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারি!’

    প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক কর্তার বক্তব্য, ‘সবারই জানা উচিত, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঝুলে আছে। যতক্ষণ না সেই মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততক্ষণ প্রাথমিকে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া আইনত মুশকিল।’

  • Link to this news (এই সময়)