সীমান্তের গ্রামে সক্রিয় জাল আধার কার্ড তৈরির চক্র, পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার দুই
আজকাল | ১৮ মে ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানা এলাকায় একটি গোপন ডেরায় বসে জাল আধার কার্ড তৈরির অভিযোগে শুক্রবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন দুই যুবক।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে সাগরপাড়া থানা পুলিশের একটি দল নরসিংহপুর বাজারে অভিযান চালায়। সেখানে একটি দোকান থেকে বারোমাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা সানাউল্লাহ শেখ (৩২) এবং আনোয়ার রহমান (৩০) নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করে শনিবার তাঁদের বহরমপুর আদালতে পেশ করা হচ্ছে।
এসডিপিও (ডোমকল) শুভম বাজাজ বলেন, 'ধৃত যুবকদের হেফাজত থেকে দু'টি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, একটি স্মার্ট ফোন, চারটি সিম কার্ড, দু'টি ফিঙ্গার স্ক্যানার এবং তিনটি আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি আটক করা 'ইলেকট্রনিক্স ডিভাইজ'গুলি ব্যবহার করেই ধৃতরা বেশ কিছুদিন ধরে বেআইনিভাবে জাল আধার কার্ড তৈরির চক্র চালাচ্ছিল।' প্রসঙ্গত গত ১৪ তারিখে মুর্শিদাবাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রানিনগর থানার কাতলামারী এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জাল আধার কার্ড তৈরির চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ফের একবার ভারত -বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে জাল আধার কার্ড তৈরির চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ায় অনেকেই সন্দেহ করছেন অনেক বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে চলা এই সমস্ত আধার কার্ড তৈরির কেন্দ্রগুলি থেকে ভারতীয় পরিচয়পত্র জোগাড় করে নিয়েছে।
এসডিপিও জানান, 'আধার কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে অনুমোদিত কিছু ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে কেবলমাত্র আধার কার্ড তৈরি এবং আপডেট করা যায়। গ্রামাঞ্চলের বাড়িতে বা দোকানে বসে যে সমস্ত ব্যক্তি আধার কার্ড তৈরি বা আপডেট করার কাজ করছে তা সবই বেআইনি।' বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া নরসিংহপুর বাজারে বেআইনি আধার কার্ড তৈরির চক্র ফাঁস হওয়ার পর সাধারণ বাসিন্দারা অনেকেই দাবি করেছেন, সানাউল্লাহর দোকানে প্রায়শই অপরিচিত মানুষের ভিড় লেগে থাকত। তাঁদের অনুমান ধৃত দুই যুবক বিভিন্ন জাল নথি ব্যবহার করে প্রচুর বাংলাদেশি নাগরিকের ভারতীয় আধার কার্ড তৈরি করেছে। সেই আধার কার্ড নিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরা এই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করার জন্য চলেও গিয়েছেন।
এসডিপিও আরও বলেন, 'প্রাথমিক তদন্ত আমরা জানতে পেরেছি নরসিংহপুর বাজারে সানাউল্লাহ শেখের একটি দোকান রয়েছে। সেই দোকানে খুব গোপনে জাল আধার কার্ড তৈরি এবং আপডেটের কাজ হত। এর জন্য কত টাকা লাগত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, 'ধৃত ব্যক্তিদের হেফাজত থেকে যে সমস্ত ল্যাপটপগুলি উদ্ধার হয়েছে তার ফরেন্সিক টেস্ট করা হবে। খতিয়ে দেখা হবে ওই ল্যাপটপগুলো ব্যবহার করে কত সংখ্যক ব্যক্তির এবং কী কী নামে আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।'