• অন্তঃসত্ত্বাকে আটকানো হয়নি, দাবি আন্দোলনরত শিক্ষকদের
    আনন্দবাজার | ১৮ মে ২০২৫
  • বিকাশ ভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গন্ডগোলের সময় কোনও সন্তানসম্ভবা মহিলাকে তাঁরা আটকাননি। বরং তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য সব রকম চেষ্টা করেছিলেন। এমনটাই দাবি করলেন এসএসসি তালিকাভুক্ত চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকেরা।

    শনিবার বিকাশ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ওই শিক্ষকদের তরফে চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “এক সন্তানসম্ভবা মহিলা বিকাশ ভবনে আটকে পড়েছিলেন এবং আমরা তাঁকে বেরোতে দিচ্ছিলাম না বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ ঠিক নয়। এমন এক জন আটকে আছেন জানতে পেরে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি ওঁকে বিকাশ ভবন থেকে বার করে আনার।”

    চিন্ময়ের দাবি, “ওই মহিলার দিদি আমাকে ফোন করেন এবং তাঁর বোনের কথা বলেন। আমি বলি যে, আমরা কোনও বাধা দেব না। উনি যেন বিকাশ ভবন থেকে বেরিয়ে যান। তখন ওই মহিলা আমাকে বলেন, তাঁর বোনকে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, বাইরের পরিস্থিতি ভাল নয়। টিয়ার গ্যাস ছোড়া হতে পারে। র‌্যাফ নামবে। এখন ভিতরে থাকুন।”

    চিন্ময়ের দাবি, এর পরে তাঁরা ওই সন্তানসম্ভবা মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, উনি যেন বিকাশ ভবনের পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যান। প্রমাণস্বরূপ ওই মহিলার দিদির সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের অডিয়ো রেকর্ডিংও সংবাদমাধ্যমকে শোনান। আর এক চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক মেহেবুব মণ্ডল বলেন, “আমরা সবরকম চেষ্টা করেছি। তবুও যদি কোনও ভাবে আমাদের জন্য ওঁর অসুবিধা হয়ে থাকে, আমরা তা হলে ক্ষমাপ্রার্থী। শিক্ষকেরা প্রয়োজনে মাথা নত করতে জানেন।”

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সন্তানসম্ভবা মহিলার দিদিও এ দিন জানিয়েছেন, আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তাঁর বোনকে আটকাননি। তিনি বলেন, “আন্দোলনরত এক শিক্ষিকাকে চিনি। তাঁর থেকেই চিন্ময়বাবুর নম্বর পেয়ে যোগাযোগ করি। উনি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তত ক্ষণে গোলমাল শুরু হয়ে গিয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষীরা কাউকে বাইরে বেরোতে দিচ্ছিলেন না। তাই ও বেরোতে পারেনি।”

    বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার গন্ডগোলের সময়ে বিকাশ ভবন চত্বরে ছিলেন বিরাটির একটি স্কুলের রসায়নের শিক্ষিকা ঈশিতা রায়। চার মাসের সন্তানসম্ভবা হয়েও ঈশিতা আন্দোলনে পথে নেমেছেন। তিনি জানালেন, গোলমালের সময়ে একটু পাশের দিকে সরে গিয়েছিলেন বলে চোট লাগেনি তাঁর। ঈশিতার সতীর্থেরা বলছেন, “ভাগ্যের পরিহাস দেখুন। এক জন গর্ভবতী মহিলা তাঁর আগামী সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য রাস্তায় লড়ছেন, এই গরমে ধুলোয় পড়ে আছেন। তাঁর খবর কিন্তু কেউ রাখেনি।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)