ফের কি কামারহাটিতে ‘জায়ান্ট’ ওরফে জয়ন্ত সিংহের ‘দাদাগিরি’র ছায়া? প্রায় এক বছর ধরে জেলবন্দি জয়ন্ত। তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ায় আড়িয়াদহের এক বাসিন্দাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের কাছে অভিযোগে ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, ‘জায়ান্ট’ বাহিনী সমাজমাধ্যমে লাইভ করে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।
প্রেমে বিচ্ছেদ, চোর সন্দেহ-সহ এলাকার যে কোনও সমস্যার বিচারের নামে নিজস্ব আদালত বসিয়ে দিত জয়ন্ত। গত বছর জুলাইয়ে মা ও ছেলেকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল আড়িয়াদহের ত্রাস বলে পরিচিত জয়ন্ত ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয় জয়ন্ত। পরবর্তী সময়ে জয়ন্তের বিরুদ্ধে একের পর এক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতে থাকে। তাতে এক নাবালককে চোর সন্দেহে ক্লাবে এনে যৌন হেনস্থা চালানো থেকে এক যুবককে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধরের ঘটনাতেও জয়ন্তের নাম জড়ায়। পুলিশি তদন্তে ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গে তার শাগরেদরাও গ্রেফতার হয়। পরে কয়েক জন জামিনে মুক্তি পেলেও এখনও জেলে রয়েছে জায়ান্ট।
জয়ন্ত জেল থেকে বেরিয়ে এলেই বাড়িতে ঢুকে তাঁদের পরিবারের সবাইকে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এমনই অভিযোগ করেছেন আড়িয়াদহের বাসিন্দা বিমল পাঁজা। তাঁর দাবি, জয়ন্তের ঘনিষ্ঠ কয়েক জন চলন্ত গাড়িতে বসেই অশ্লীল ভাষায় হুমকি দিয়েছে। জয়ন্তের অত্যাচারের ঘটনার মামলায় ব্যারাকপুর আদালতে সাক্ষী দিয়েছিলেন এলাকার অনেকেই। তাঁদেরই এক জন বিমল। তিনি জানান, গত বছরের ১ জুলাই রাতে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেছিল জয়ন্ত-বাহিনী। গুরুতর জখম হয়েছিলেন মা ও ছেলে। এর পরে দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের চিকিৎসা চলে। বিমল বলেন, ‘‘আদালতে সাক্ষী দিতে গেলেও হুমকি দেওয়া হত। এ বার ফেসবুক-লাইভ করে পুরো পরিবারকে মেরে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কোনও পুলিশ বা নেতা আমাদের বাঁচাতে পারবেন না বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আতঙ্কে আছি।’’ বেলঘরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিমল।
এমন ভিডিয়ো করে হুমকি দেওয়াকে তিনি সমর্থন করেন না জানিয়ে স্থানীয় বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, ‘‘জয়ন্ত ও বিমল, দু’জনকেই চিনি। বিমল আমাদের দলের সঙ্গে যুক্ত। তবে যারা হুমকি দিয়েছে, তাদের চিনি না। কিন্তু এ হেন হুমকিতে জনমানসে আবার ভীতি তৈরি হচ্ছে।’’ ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘এর আগেও আমাদের তরফে কোনও অপরাধীকে রেয়াত করা হয়নি। এ বারেও করা হবে না। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’